মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনার সালিস চলাকালে ছুরি মেরে প্রতিপক্ষের দুজনকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তিনজন হলেন মো. ইমন হোসেন (২২), মো. সাকিব হোসেন (১৯) ও মিন্টু প্রধান (৪০)। ইমন উপজেলার উত্তর ইসলামপুর এলাকার কাশেম পাঠানের ছেলে, সাকিব একই এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে ও মিন্টু প্রধান একই এলাকার মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, এলাকার কিশোর-তরুণদের কয়েকটি দল আছে। আধিপত্য নিয়ে পক্ষগুলো প্রায়ই ঝামেলায় জড়ায়। ঘটে মারামারির ঘটনাও। গতকাল বিকেলে একটি পক্ষের সৌরভ ও অভিদের সঙ্গে অন্য পক্ষের ইমন ও সাকিবদের কথা–কাটাকাটি হয়। এ সময় উভয় পক্ষ হাতাহাতি–মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে রাত ৯টার দিকে সালিসে বসে দুই পক্ষের লোকজন। সালিসের একপর্যায়ে সৌরভদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন ইমনদের পক্ষের লোকজনকে মারধর শুরু করে। সে সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ইমন, সাকিব ও মিন্টু প্রধান। রাত ১১টার দিকে তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাত ১২টার দিকে মারা যান সাকিব।
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে এক তরুণ মৃত ছিলেন। অপর দুজন গুরুতর আহত ছিলেন। ওই দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নিহত সাকিবের বড় বোন সাথী আক্তার বলেন, সালিসে তাঁর মা–বাবাও গিয়েছিলেন। তাঁর ভাই সাকিব মাফ চাওয়ার জন্য প্রতিপক্ষের লোকজনের পায়ে ধরেছিল। ওই সময় ভাইকে ছুরি মারা হয় বলে তাঁর ভাষ্য। তিনি ভাই হত্যার বিচার চান।
মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে। কোনো একটি বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব হয়েছিল। গতকাল রাতে এ নিয়ে সালিস বসে। সেখানেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৮ থেকে ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। যারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
সূত্র : প্রথম আলো