বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্তদের মামলা করার পরামর্শ আইজিপির

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের তাণ্ডবে পুড়ে যাওয়া ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি এসব স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা মামলা করেন। ভয় পাবেন না। যা হয়েছে, সবই জঙ্গি কর্মকাণ্ড। যারা ধ্বংস করেছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে।’

দুপুর পৌনে ১২টায় বেনজীর আহমেদ হেলিকপ্টারে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে আসেন। সেখান থেকে তিনি হেফাজতের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ পৌর মিলনায়তন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা, বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, সুরসম্রাট দ্য আলাউদ্দিন সংগীতাঙ্গন, সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব, আনন্দময়ী কালীবাড়ি মন্দিরসহ বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব পরিদর্শন শেষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম গত ২৬-২৮ মার্চ ঘটনার বর্ণনা দেন। এ সময় বেনজীর আহমেদ জেলার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা ভয় পাবেন না। আপনারা একা নন। ১৮ কোটি মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছেন। দেশের আইন আপনাদের সঙ্গে আছে। আমরা দিনের ভিডিও ফেসবুকে দিয়েছি। আপনাদের কাছে স্থির চিত্র (ছবি) ও ভিডিও থাকলে দিয়ে দেন। এদের চিহ্নিত করার সময় এসেছে। প্রতিবছরই চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৃশংস ঘটনা ঘটে ও তাণ্ডব হয়। আমরা কি ৫০ বছর পেছনে ফিরে গেলাম?’
বেনজীর আহমেদ আরও বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫৭৬টি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব মাদ্রাসায় ১ লাখ ৩ হাজার শিক্ষার্থী পড়ছেন। ইসলামের স্বার্থে পড়াশোনা করছেন। এলাকার লোকজন বছরে ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা এসব মাদ্রাসায় জোগান দেন। সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০০ থেকে ২৫০ বছরের পুরোনো নথিপত্রের বিষয়ে এখানকার মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে। এখন সুবিধাবাদী লোকজন এ থেকে সুবিধা নেবে।

এ সময় আইজিপির সঙ্গে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের বিশেষ শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াদ-উদদৌলা খান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আনিসুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর, ঢাকা ও চট্টগ্রামে মাদ্রাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকেরা অর্ধশতাধিক সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মামলা হয়েছে ১৪টি। এতে ১৫ হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

 

সূত্র : প্রথম আলো