সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে এ এম আমিন উদ্দিন পূর্ণ সন্তুষ্টির সাথে সভাপতির দায়িত্ব-কর্তব্য যথাযথ ভাবে পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
১৩ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব শেষ হওয়ায় মাধ্যমে বিগত সময়ের উন্নয়ন নিয়ে সদ্য বিদায়ী সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন একটি বক্তব্য উপস্থাপন করেন তার ব্যক্তিগত ফেইসবুকের মাধ্যমে।
প্রথমেই ধারাবাহিক দুই মেয়াদে (২০১৯-২০ ও ২০২০-২১) সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত করায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ২০১৯-২০ মেয়াদে প্রথমবার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে বারের সকল সদস্যদের কাছে আমি দুইটি বিষয়ে কথা দিয়েছিলাম।
প্রথমত, সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনকে একটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন বার হিসাবে উপস্থাপন করতে সচেষ্ট থাকবো। এবং দ্বিতীয়ত, আইনজীবীদের বসার স্থান সংকুলানের জন্যও আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ২০১৯-২০ মেয়াদে আপনাদের কাছে দেয়া অঙ্গীকারগুলো পূরণে আমি দায়িত্ব গ্রহনের পর পরই সেই সময়ের কার্যকরী কমিটির সহযোগীতায় বারের উন্নয়নের জন্য সরকারের নিকট আর্থিক বরাদ্দের আবেদন করি ও সরকারের উর্ধ্বতন ব্যক্তিবর্গের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ও তৎকালীন মাননীয় পূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিমের আন্তরিক সহযোগীতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আমাদের বারের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে সাড়ে সতের কোটি টাকার সরকারী উন্নয়ন বরাদ্দ প্রদান করেন।
২০১৯-২০ সালের কমিটির মেয়াদকালীন সময়ে সরকারী নিয়মনীতি মেনেই ৬ই মার্চ, ২০২০ তারিখে ঐ বরাদ্দের টেন্ডার আহবান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। কিন্তু বৈশ্বিক কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে কাজ শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়।
এই সময়ে সাবেক সভাপতি আরও বলেন, আপনাদের আস্থা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে ২০২০-২১ সালে আমি পুনরায় সমিতির সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহন করি। সরকারী বরাদ্দে আমাদের প্রিয় বারের আধুনিকায়ন ও উন্নয়ন কার্যক্রম এখন সকলের কাছে অনেকটাই দৃশ্যমান। ২০২০-২১ সালের কমিটির প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত সুচারুভাবে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম মনিটর করেছেন। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই আপনারা দেখতে পাচ্ছেন-
১. বারের দৃষ্টিনন্দন প্রবেশদ্বার
২. বারের করিডোরের সৌন্দর্য বর্ধন
৩. বারের ওয়াশরুম গুলোর আধুনিকায়ন
৪. পর্যায়ক্রমে আইনজীবীদের জন্য হলরুমগুলোর আধুনিকায়ন
৫. ঢেলে সাজানো হয়েছে অপর্যাপ্ত সুয়ারেজ লাইন
৬. বিদ্যুতের লোড দ্বিগুনেরও বেশী বৃদ্ধি করা
৭. বারের লাইব্রেরী আধুনিকায়ন ও প্রতি বছর সরকারের সহযোগীতায় বই কেনার অনুদানের ব্যবস্থা
৮. স্থায়ী বুকস্টল নির্মান
৯. এনেক্স কোর্ট ভবনের এ্যডভোকেট লাউঞ্জ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকরন
সে সাথে তিনি এটাও আশ্বাস দিয়ে বলেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যে আপনারা এনেক্স ভবনের হলরুম, ওয়াশরুম, করিডোরের পরিবর্তন এবং অডিটোরিয়াম সংস্কার পর্যায়ক্রমে আধুনিকায়ন হতে দেখতে পাবেন।
এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ২০২০-২১ মেয়াদে আমরা আইনজীবীদের বসার স্থানের সংকট নিরসনে “ভবন-২০২০” নামে একটি আধুনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা চুড়ান্ত অনুমোদন করে ঠিকাদার নিয়োগ চুড়ান্ত করেছি। আশা করছি, বর্তমান কমিটি খুব দ্রুতই ভবনের নির্মান কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে তাতে করে আইনজীবীদের বসার সংকট নিরসন হবে।
কোভিড-১৯ মহামারীকালে আমি ও কমিটির সদস্যগণ আন্তরিকভাবে বারের সকল প্রয়োজনে আইনজীবী বন্ধুদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। করোনা ভাইরাস পরীক্ষা ও চিকিৎসায় বিজ্ঞ সদস্যদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল; লকডাউনে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সদস্যদের সহজ শর্তে ঋন প্রদান করা হয়েছে।
সদ্য বিদায়ী সভাপতি ফেইসবুক বক্তব্যে সকল উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় সাথে থাকার জন্য সমিতির বর্তমান সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও বিগত ২০১৯-২০২০ কার্যকরী কমিটির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ. এম. মাহবুব উদ্দিন খোকনকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিগত ২০১৯-২০২০ ও ২০২০-২০২১ মেয়াদে নির্বাচিত সকল অফিস বেয়ারা ও সন্মানিত সদস্যদের। সে সাথে সকল আইনজীবীকে সুস্থ ও নিরাপদ শরীরে চলমান মহামারী মোকাবেলার অনুরোধ জানান।
- ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম ডেস্ক রিপোর্ট