করোনা সংক্রমণে চারদিকে বিপর্যয়ের মধ্যেই চলছে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট তৈরির কাজ। চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে ৯টি খাত।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বাড়তি নজর সরকারের। বিশ্লেষকরা বলছেন, মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা থাকতে হবে।
করোনা ভাইরাস মহামারিতে সামনে এসেছে ভিন্ন এক প্রেক্ষাপট। সার্বিক কর্মপন্থায় এসেছে পরিবর্তন। কাজের ক্ষেত্রে বেড়েছে প্রযুক্তি নির্ভরতা। সংকটের মধ্যেই শুরু হয়েছে বাজেট তৈরির কাজ। তবে চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এবার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মতামত নেওয়া হচ্ছে ভার্চ্যুয়ালি।
এবারের বাজেটে স্বাভাবিকভাবেই গুরুত্ব পাচ্ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং এর অভিঘাত থেকে উত্তরণের দিক।
আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে যে ৯টি খাত অগ্রাধিকার তালিকায় স্থান পেয়েছে তার মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত খাত রয়েছে তিনটি। খাতগুলো হচ্ছে- করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ, প্রণোদনা প্যাকেজের সফল বাস্তবায়ন এবং স্বাস্থ্যখাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ ও ক্ষতিপূরণ।
এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় চিকিৎসা সামগ্রী এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি টিকা কার্যক্রম শক্তিশালী করাও চলমান কার্যক্রমের মধ্যে রাখতে হবে।
অন্যান্য অগ্রাধিকার খাতের মধ্যে কৃষিকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার (কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, সেচ ও বীজে প্রণোদনা ও ভর্তুকি)। বিস্তৃত আকারে কর্মসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে পল্লী এলাকার উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আরও সম্প্রসারণ করা।
তৌফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, মানুষের আয়ের একটি বড় অংশ করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের যদি রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরাপত্তা দিতে না পারি, তাহলে যে অর্থনৈতিক কার্যক্রম সেটা ক্ষতি হয়ে যাবে।
গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ, নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা চালু এবং মানব সম্পদ উন্নয়নে শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের জন্য থাকবে ভিন্ন দৃষ্টি।
অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন বলেন, দেশের চার কোটি মানুষ এখন দারিদ্র সীমার নিচে। তারা ইনফরমাল সেক্টরে কাজ করতেন। তাদের আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। যারা একেবারেই দরিদ্র তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। আয় রোজগার বাড়াতে হবে। দারিদ্র যাতে আর না বাড়ে সেটার ব্যবস্থা করতে হবে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটের মত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটেও করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ থোক বরাদ্দ রাখার পক্ষে অর্থমন্ত্রণালয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।