সরকারি অফিস থেকে ‘তথ্য চুরির’ অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহাবাগ থানায় দায়ের করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
১৮ মে (মঙ্গলবার) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীমের আদালত মামলার এজাহার গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে মঙ্গলবার শাহাবাগ থানার এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আরিফুর রহমান সর্দার রোজিনা ইসলামকে আদালতে হাজির করেন। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার জামিনের আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রিমান্ড না মঞ্জুর করে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি জামিনের বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২০ মে দিন ধার্য করেন আদালত।
উল্লেখ্য, ১৭ মে (সোমবার) ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে রাতে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে।
রোজিনা ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য ১৭ মে (সোমবার) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। পরে খবর পাওয়া যায় তাকে সেখানে কর্মকর্তারা একটি কক্ষে আটকে রেখেছেন।
রোজিনা ইসলামকে আটকে রাখার খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে রোজিনাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কিছুই জানাননি।
একপর্যায়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে কিছু নথি সরানোর অভিযোগ এনে পুলিশ ডাকা হয়েছে। পরে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় নিয়ে রাখা হয়। পুলিশ জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে থানায় আনা হয়েছে।
প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রোজিনা ইসলাম এই মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা নিয়ে বেশ কিছু রিপোর্ট করছিলেন। যার মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির রিপোর্ট ছিল। আমরা মনে করছি, এতে তিনি মন্ত্রণালয়ের আক্রোশের শিকার হয়ে থাকতে পারেন।’
এ ঘটনায় পুলিশ রোজিনা ইসলামের নামে তথ্য চুরির অভিযোগে রাতেই শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়।