আদালতের কাছে ক্ষমা চাওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দের ১০ হাজার টাকা জরিমানা মওকুফ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে সতর্ক করে আদালত বলেন, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, আপনি ফেসবুকে আদালত নিয়ে নানান কথা লিখেন। আপনার অনেক বয়স হয়েছে। সাবধান হয়ে যান।
২৪ মে (সোমবার) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ জরিমানা মওকুফ করে এসব কথা বলেন।
ইউনুছ আলী আকন্দ আদালতে বলেন, আপনার আদালতের জুম আইডি পরিবর্তন হওয়ায় আমি ওইদিন শুনানিতে অংশ নিতে পারিনি। এজন্য ক্ষমা চাচ্ছি। আমাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা মাফ করে দিন। আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
এর আগে গত ৪ মে (মঙ্গলবার) লকডাউন চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করে বার বার বলার পরও শুনানিতে অংশ না নেওয়ায় অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে লকডাউনের বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট খারিজ করে দেন আদালত।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সিদ্ধান্ত দেন। আদালত বলেন, রিট করে তিনি মিডিয়ায় প্রচার করেন। কিন্তু মামলা তালিকায় আসার পর তিনি আর কোর্টে থাকেন না।
গত ২৫ এপ্রিল জরুরি অবস্থা জারি করা ব্যতীত লকডাউন দেওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে এ রিট আবেদন করা হয়। রিট আবেদনে চলমান লকডাউনের ওপর স্থগিতাদেশ এবং আর যাতে লকডাউন দেওয়া না হয়, সেজন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আবেদনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জাতীয় কারিগরি উপদেষ্টা কমিটিকে বিবাদী করা হয়েছে।
ইউনুছ আলী আকন্দ জানান, জরুরি অবস্থা জারি করা ছাড়া জনগণের চলাফেরার অধিকার, আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার সরকার স্থগিত রাখতে পারে না। কিন্তু সরকার জরুরি অবস্থা জারি ছাড়াই লকডাউন দিয়েছে, যা সংবিধানের ২৭, ২৮, ৩১, ৩২, ৩৩, ৩৫ ও ৩৬ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।
উল্লেখ্য, আলোচিত বিষয় নিয়ে ‘জনস্বার্থের’ নামে রিটকারী আইনজীবী হিসেবে পরিচিত অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ গত বছরের ১২ অক্টোবর ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা নিয়ে ফেসবুকে কটাক্ষ করে স্ট্যাটাস দেয়। এতে গুরুতর আদালত অবমাননা হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দকে দোষী সাব্যস্ত করেন আপিল বিভাগ। এ ঘটনায় তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইসঙ্গে তাকে তিন মাসের জন্য আইন পেশা থেকে বরখাস্ত করেন আদালত।