কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় থানায় নিয়মিত মামলা না নিয়ে মোবাইল কোর্টের কাছে সোপর্দ করার অভিযোগে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদালতে তলব করা হয়েছে।
২৬ মে (বুধবার) কিশোরগঞ্জের ৩নং আমল গ্রহণকারী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেন এ নির্দেশ দেন।
নির্দেশে পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো. সারোয়ার জাহানকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
কিশোরগঞ্জের সিজেএম কোর্টের এক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ২৫ মে (মঙ্গলবার) পাকুন্দিয়ায় এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা অভিযুক্ত যুবককে আটক করে থানায় সোপর্দ করে।
এ ঘটনায় পাকুন্দিয়া থানার ওসি বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(৪)/খ ধারায় থানায় নিয়মিত মামলা রুজু না করে আসামিকে মোবাইল কোর্টের কাছে সোপর্দ করেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযুক্তকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান।
এ ঘটনাটি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হলে আদালতের নজরে আসে। আদালত স্ব-প্রণোদিত হয়ে আইন অমান্য করায় ওসিকে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৫০৯ ধারায় যে রায় দিয়েছেন, সেটিও আইনসিদ্ধ হয়নি। এটির এখতিয়ার ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেই। এছাড়া এ ধারায় সর্বোচ্চ সাজা দেয়ার ক্ষমতা হচ্ছে এক বছর।
পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সারোয়ার জাহান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি জানান, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিযোগ পেয়ে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাজা দেন। পুলিশ আদালতের কাজে সহযোগিতা করে। সাজা দেয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।’
স্থানীয়রা অভিযুক্তকে আটক করে থানায় সোপর্দ করার অভিযোগ সত্য নয় উল্লেখ করে ওসি বলেন, ‘একটি পত্রিকায় ভুল তথ্য প্রকাশিত হওয়ায় এমনটা হয়েছে। আমি আদালতে হাজির হয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করবো।’
এ বিষয়ে কথা বলতে পাকুন্দিয়া ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) এ কে এম লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।