শাহ্ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান:
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের চেতনার স্মৃতিবিজড়িত স্মারক বাংলা একাডেমি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সংস্কৃতির গবেষণাচর্চায় নিয়োজিত এক অনন্য জাতীয় ঐতিহ্যিক ও ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান। বাংলা একাডেমিকে বলা হয় বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক। এই প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যা ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের বুকের তাজা রক্ত থেকে উঠে এসেছে। এদেশে আর কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেনি।
একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, বাংলা একাডেমির আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠার অনেক পরে বাংলা একাডেমি আইন, ১৯৫৭ গেজেট আকারে জারি হয়। মূলত দেশের তরুণ ছাত্রসমাজ থেকে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষারূপে স্বীকৃতিদানের দাবি এবং যুক্তফ্রণ্টের একুশ দফার অন্যতম দফা বাস্তবায়নের প্রেক্ষিতেই ইহা সম্ভব হয়েছিল। একাডেমির জন্ম ও বিকাশ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গঠন প্রক্রিয়ার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫)-এর নেতৃত্বে ‘১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করে [জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের] মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করা। এই প্রতিষ্ঠা অর্জনের নেপথ্যে ভাষা আন্দোলন বাঙালির জাতিসত্তা নির্মাণ, নিজস্ব রাষ্ট্রগঠন ও জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রেরণা এবং আদর্শের প্রতীকরূপে কাজ করেছিল। এই ভাষা আন্দোলনেরই প্রত্যক্ষ ফসল বাংলা একাডেমি। কয়েকটি বড় বড় দালানের সমন্বয়ে এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু একাডেমি নয়; এই প্রতিষ্ঠান একটি জাতি তৈরি, একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অপরিহার্য অংশরূপে কাজ করেছিল এবং এই কাজ অব্যাহতভাবেই করছে। বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা যতদিন পৃথিবীতে বহমান থাকবে- বাংলা একাডেমি বাঙালির বাতিঘররূপে ততদিনই নিরন্তরভাবে কাজ করবে। সুতরাং ভাষা আন্দোলন ও বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ এই প্রত্যয়গুলি অবিচ্ছিন্ন সত্তাÑ একটি ছাড়া অপরটি খণ্ডিত।
বাংলা একাডেমি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানে দেশÑবিদেশের বহু মনীষার স্মৃতি-বিজড়িত। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)-সহ অনেক মনীষার স্মৃতি গভীর একাত্মতায় জড়িয়ে রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানকে ২০১০ সালে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ প্রদান করে সম্মানীত করা হয়। ১৯৫৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর মোতাবেক ১৩৬২ বঙ্গাব্দের ১৭ই অগ্রহায়ণ বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০১৫ সালে এই প্রতিষ্ঠান হীরকজয়ন্তী উদ্যাপন করেছে। বহুভাষাবিদ জ্ঞানতাপস মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৮৮৫-১৯৬৯) বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা। বাংলা একাডেমিকে আইনগতভাবেই বাংলাদেশে বাংলা ভাষার লালন বিকাশ ও অভিধান প্রণয়নের একমাত্র প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই একাডেমি তার উপর অর্পিত দায়িত্ব নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রতিপালন করছে এবং মুক্তিযুদ্ধোত্তর কালে মুক্তিযুদ্ধ থেকে অভিজ্ঞতা ও অনুপ্রেরণা নিয়ে এই দায়িত্বের পরিসর নানা দিক থেকে বিস্তৃত হয়েছে। প্রতিবছর ফেব্রæয়ারির মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত অমর একুশে বইমেলা এই বিস্তৃত পরিসরের অনন্য সংযোজন যা বাঙালির জাতীয় ঐতিহ্যের রূপ পেয়েছে। অনুরূপভাবে একাডেমির বইপত্র ও সাময়িকীর প্রতি দেশের আপামর মানুষের আস্থা এবং ভালোবাসা অর্জন করেছে। দেশের খ্যাতিমান লেখক, পণ্ডিত, গবেষকগণ একাডেমির সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করতে সম্মানিতবোধ করেন। বাংলা একাডেমি গুণী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমির সম্মানসূচক ফেলোশিপ, জীবনসদস্য, সাধারণ সদস্য পদ প্রদান করে এবং বিভিন্ন পুরস্কার ও গবেষণাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে গবেষণা-সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করে। বাংলা একাডেমি প্রবর্তিত ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ এদেশে বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার। ১৯৬০ সাল থেকে বাংলা একাডেমি প্রতিবছর সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় এ পুরস্কার প্রদান করছেন।
এই পর্যায়ে বাংলা একাডেমির আইন কাঠামো ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা যাক। বাংলা একাডেমির আইন কাঠামো ব্যবস্থায় শুরু থেকেই নিজস্ব কিছু স্বক্রিয়তা ছিল। এই স্বক্রিয়তাগুলো হলো-এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্বরূপ, বাঙালি জাতিসত্তা স্মারক, স্বাধীনভাবে পরিচালিত হওয়ার প্রত্যয় ইত্যাদি। ১৯৫৫ সালের ২৬শে নভেম্বর বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হলে পরের মাসে ১৯৫৫ সালের ৩রা ডিসেম্বর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার যাত্রা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। অতঃপর ১৯৫৭ সালের ৩রা এপ্রিল পূর্ব পাকিস্তান সংসদে ইংরেজিতে রচিত The Bangali Academy Act, 1957 পাস হলে ১৯৫৭ সালের ১৩ই জুন প্রথম ইংরেজিতে রচিত The Bangali Academy Act, 1957 গেজেট আকারে জারি হয়। লক্ষণীয় যে, বাংলা একাডেমি আইন কাঠামো ছাড়াই যাত্রা শুরু করে- পরে আইনি কাঠামো প্রদান করা হয়। ভাষা শহিদদের রক্তের ইতিহাসের পরিপ্রেক্ষিত, সাধারণ মানুষের দাবি, রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এসব কারণে আইনি কাঠামো ছাড়াই বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠার যাত্রা শুরু করেছিল। এ জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রিপেয়াটরি কমিটি গঠন করা হয়। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এ কমিটির সদস্য ছিলেন। একাডেমির যাত্রার শুরু সময় প্রথম কর্মকর্তা ছিলেন মুহম্মদ বরকত উল্লাহ (১৮৯৮-১৯৭৪), তাঁর পদবি ছিল স্পেশাল অফিসার। অতঃপর অনেক পরে একাডেমির জন্য প্রণীত The Bangali Academy Act, 1957 জারিকৃত আইন দিয়ে বাংলা একাডেমির কার্যাবলি পরিচালিত হতে থাকে। এই আইনের ধারা ছিল ১৭টি। আইনের প্রধান কয়েকটি ধারার বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ১১ ও ১২ ধারায় বাংলা একাডেমির পরিচালক ও সেক্রেটারি নিয়োগের বিধান ছিল। সেক্রেটারিকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বাংলায় কর্মধ্যক্ষ বলা হতো। পরে এ পদটির বাংলা সচিব করা হয়। ড. মুহম্মদ এনামুল হক (১৯০২-১৯৮২) বাংলা একাডেমি প্রথম পরিচালক ছিলেন। ১৯৫৭ সালের এই আইনে বাংলা একাডেমিকে স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা প্রদান করা হয়েছিল। এই আইনের ধারা ৯-এর উপধারা ১ ও ২ অনুযায়ী বাংলা একাডেমির একটি কাউন্সিলের বিধান রাখা হয়। সে সময় কাউন্সিলকে বাংলায় বলা হতো ‘কার্যকর সংসদ’, কখনও ‘কর্মপরিষদ। ১৯৭২ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এর নাম হয় ‘কার্যনির্বাহী পরিষদ’। ২০১৩ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে এর নাম ‘নির্বাহী পরিষদ’। এ আইনের ধারা ১০-তে বিধান ছিল একাডেমির প্রশাসন কাউন্সিলের উপর ন্যস্ত, কাউন্সিল একাডেমির সকল কার্যনির্বাহ করবেন, বাজেট অনুমোদন প্রদান, একাডেমির প্রশাসন গড়ে তোলার জন্য একাডেমির পরিচালকের সুপারিশক্রমে পদসৃষ্টি, বিলোপ বা সমন্বয় করবেন; একাডেমির সকল সিদ্ধান্ত নির্বাহ করবেন এবং নির্বাহকৃত সিদ্ধান্তের কোনো অংশ লেখিতভাবে একাডেমির পরিচালকের উপর ন্যস্ত করতে পারবেন।
এই আইনের ধারা ১৩ অনুযায়ী বাংলা একাডেমির বার্ষিক সাধারণ সভার বিধান রাখা হয়েছিল। আইনের ধারা ৫-এর উপধারা ১ অনুযায়ী একাডেমির জন্য ছয়টি বিভাগ রাখার বিধান ছিল।
এ আইনের ধারা ৬-এর দফা সি অনুযায়ী সাহিত্য পুরস্কার প্রদানের বিধান ছিল।
আইনের ধারা ৩-এর উপধারা ১ অনুযায়ী একাডেমির একটি অভিন্ন সিলমোহরের বিধান ছিল। বাংলা একাডেমি আইন, ১৯৫৭ পরবর্তী কালে পূর্বপাকিস্তান গভর্ণরের আদেশে একবার সংশোধন করা হয়েছিল। এটি ১৯৬০ সালের ২৬ জুলাই। সংশোধিত ও সংযোজিত আইন `The Bengali Academy (Amendment) Ordinace, 1960’। বাংলা একাডেমি আইন ১৯৫৭ (সংশোধিত ১৯৬০) দিয়ে ১৯৭২ সালের মে পর্যন্ত বাংলা একাডেমি পরিচালিত হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। বাংলা একাডেমি এই রাষ্ট্র অভ্যুদয়ের নেপথ্যে অনুপ্রেরণা ও চেতনা যোগায়েছিল নিরন্তরভাবে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধোত্তর স্বাধীন বাংলাদেশের পুনর্গঠনের সাথে বাংলা একাডেমিরও পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়। এই পুনর্গঠনের ফলে বাংলা একাডেমিকে বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়। এ লক্ষ্যেই মুক্তিযুদ্ধোত্তর সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে বাংলা একাডেমি আইন, ১৯৫৭ (সংশোধিত ১৯৬০) রদ করে ১৯৭২ সালের ১৭ই মে ইংরেজিতে রচিত রাষ্ট্রপতির আদেশ `The Bengali Academy Order, 1972 (P. O. No of 1972) জারি করা হয়। এই আদেশের বিশেষ একটি দিক হলো ঢাকায় কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের প্রতিষ্ঠিত ও নিয়ন্ত্রিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান ‘ কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড’-কে বাংলা একাডেমির সঙ্গে একীভ‚তকরা হয়। আইনের বিধান অনুযায়ী একাডেমির নির্বাহী প্রধানকে পরিচালক থেকে মহাপরিচালক পদে উন্নীত করা হয়। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ফোকলোরবিদ মযহারুল ইসলামকে প্রথম এ পদে নিয়োগ করা হয়। এই আইনের অনুচ্ছেদ ৯-এর উপানুচ্ছেদ ১ অনুযায়ী কাউন্সিলের নাম করা হয় কার্যনির্বাহী পরিষদ; অনুচ্ছেদ ৬-এর উপানুচ্ছেদ ১ অনুযায়ী ডিপার্টমেন্টগুলোর নাম হয় ডিভিশন। অনুচ্ছেদ ১০ অনুযায়ী একাডেমির সেক্রেটারির পদটি নাম হয় সচিব। আইনের অনুচ্ছেদ ১৪-এর উপানুচ্ছেদ অনুযায়ী ডিভিশনগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া একাধিক পরিচালকদের। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের জারিকৃত আইন দিয়ে বাংলা একাডেমি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়ে এসেছিল। কিন্তু স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনঃগঠনের মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশের অগ্রগতি, জাতির অগ্রগতির চাকা উল্টো যাত্রা শুরু হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের এই পটপরিবর্তনের প্রভাব বাংলা একাডেমিতেও পতিত হয়। বাংলাদেশের আতুড়ঘরতুল্য এই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চরিত্র থেকে বিচ্যুত করা হয়। ফলে `The Bengali Academy Order, 1972 রদ করে ১৯৭৮ সালের ৬ই জুন `The Bengali Academy Order, 1972 জারি করা হলো। ১৯৭২ সালের আইনটি ছিল উৎকৃষ্টতর, ১৯৭৮ সালের আইনে একাডেমিকে সীমিত করা হয়েছিল। পরবর্তী কালে উক্ত আইনের সাথে পঠিত ১৯৮৩ সালের ২৫শে মে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের আরেকটি আদেশে একাডেমির বিভাগ সংখ্যা ৭টি থেকে কমিয়ে ৪টি করা হয়। এভাবে ১৯৭৮ সালের আইনটি দিয়ে দীর্ঘদিন বাংলা একাডেমি পরিচালিত হয়। এই আইনে প্রবিধানমালা প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল- কিন্তু প্রবিধানমালা প্রণয়ন করা হলেও তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি হয়নি। বহু প্রতীক্ষার পর ২০১৩ সালের ২২শে সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে বাংলায় রচিত বাংলা একাডেমি বিল, ২০১৩ পাস হয়। বাংলা একাডেমির জন্য প্রথম বাংলা ভাষায় রচিত বাংলা একাডেমি আইন, ২০১৩ কার্যকরের মধ্য দিয়ে এক নিরব বিপ্লবসাধন হয়। একাডেমির জন্য এটি একটি অনন্য ঘটনা। এই আইনে ৪৩টি ধারা রয়েছে। একাডেমির এই আইনের প্রধান কয়েকটি ধারার বিধান হলো- আইনে কার্যনির্বাহী পরিষদকে নির্বাহী পরিষদ বলা হয়েছে (ধারা ২৩)। ধারা ৩-এর উপধারায় বাংলা একাডেমিকে সংবিধিবদ্ধ সংস্থার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। ধারা ১১- অনুযায়ী বাংলা একাডেমি এদেশে বাংলা ভাষা লালন বিকাশ ও অভিধান প্রণয়নের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
এই আইনে ধারা ১২ অনুযায়ী একাডেমির জন্য ৮টি বিভাগ সৃষ্টি করা হয়েছে। আইনের ধারা ৪১ অনুযায়ী প্রবিধানমালা প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।
বিদ্যমান আইনের ক্ষমতানুযায়ী ২০২১ সালের ৪ঠা মার্চ প্রবিধানমালা প্রণয়নপূর্বক প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছে। এই দুটি আইন জারি হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমির কার্যাবলির গতি পাচ্ছে। বাংলা একাডেমির জন্য বিদ্যমান বাংলা একাডেমি আইন, ২০১৩ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা, সাংবিধানিক আইন ও আইনের শাসন এবং মৌলিক মানবাধিকারকে সমুন্নত করেছে। বাংলা একাডেমি এসব আইন-প্রবিধানমালা অনুসরণে নিবিষ্ট কর্মসাধনা করে এগিয়ে চলেছে এবং চলবে।
লেখক : গবেষক