জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন করে তা দখলে রাখার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় এক নারীকে পৃথক দুই ধারায় চার বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি অসাধু উপায়ে অর্জিত ২৮ লাখ ২৫ হাজার ৪৬০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (১৬ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আসামির নাম মোসা. নেকলেস ইসলাম পলি। তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা তাহমিদ ইসলাম মিলনের স্ত্রী।
সংশ্লিষ্ট আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. ওবায়দুল রায়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রায় ঘোষণার সময় নেকলেস ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আসামিকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় নেকলেস ইসলামকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। আর দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় তাকে আরও তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ২ লাখ ২৫ হাজার ৪৬০ টাকা অর্থদণ্ড করেন। এছাড়া অসাধু উপায়ে অর্জিত ২৮ লাখ ২৫ হাজার ৪৬০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন আদালত।
তবে নেকলেস ইসলামকে দেওয়া দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে আদালত আদেশে উল্লেখ করেন। সেক্ষেত্রে তাকে তিন বছর বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
মামলার প্রেক্ষাপট
নেকলেস ইসলাম একজন গৃহিনী। তার দৃশ্যমান কোনো আয়ের উৎস নেই। তার স্বামী তাহমিদুল ইসলাম ১৯৯১ সাল থেকে কনিষ্ঠ হিসাব সহকারী ও ২০০২ সাল মামলা দায়ের হওয়া পর্যন্ত রাজউকের হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ দিয়ে নেকলেস ইসলাম জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন মর্মে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়।
এ প্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৭ অক্টোবর তাকে সম্পদ বিবরণী দাখিলে নোটিশ দেয় দুদক। নেকলেস ইসলাম ২৮ অক্টোবর দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ১৪ লাখ ১২ হাজার ২৪০ টাকার সম্পদ প্রদর্শন না করে গোপন করে। মিথ্যা সম্পদ বিবরণী দাখিল করে এবং নিজ নামে অর্জিত ৯৬ লাখ ৯৫ হাজার ২৪০ টাকার সম্পদের মধ্যে ৩৫ লাখ সাত হাজার ২৪০ টাকার জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখেন।
এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুদকের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৪ জুলাই একই ব্যক্তি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।