সিরাজগঞ্জে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের কর্মচারী কর্তৃক আইনজীবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি। একই সাথে ওই আদালত কর্মচারীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
আজ রোববার (১৬ জানুয়ারি) আইনজীবী সমিতি জরুরী সাধারণ সভায় আদালত বর্জনসহ চার দফা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। সমিতির সভাপতি মীর রুহুল আমীন বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রউফ পান্না স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে সিরজাগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম কোর্টে নিজস্ব চেম্বারে অবস্থান করছিলেন। এ সময় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের স্টেনোগ্রাফার ইউসুফ আলী কতিপয় সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে আইনজীবী আবুল কালামের ওপর অতর্কিত আক্রমণ করে শারীরিকভাবে ব্যাপক আঘাত করে। এতে ওই আইনজীবী আহত হন।
পরবর্তীতে আদালত কর্মচারীর এমন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে জেলা ও দায়রা জজকে অবহিত করা হয়। পাশাপাশি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে লিখিত আবেদন করা হয়। সেই সাথে সমিতির পক্ষ থেকে স্টেনোগ্রাফার ইউসুফসহ ২ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়।
এ প্রেক্ষিতে জেলা জজ সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ উক্ত সিনিয়র আইনজীবীকে ফোন করেন এবং আজ রোববার (১৬ জানুয়ারি) সকাল ১০.০০ ঘটিকায় সাক্ষাতের আমন্ত্রণ জানান।
এরমধ্যেই ম্যাজিস্ট্রেট এবং জজ কোর্টের কর্মচারীদের ব্যানারে একদল উগ্রপন্থী ও সন্ত্রাসী কর্মচারীরা আপত্তিকর একটি ব্যানারসহ কোর্ট চত্তরে মিছিল বের করে। এ সময় তারা আদালতের অফিস কক্ষসহ সকল এজলাসে তালা লাগিয়ে দেয়। ফলে বিচারকাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়।
আদালত কর্মচারীদের শিষ্টাচার বর্হিভূত ও চরম অনৈতিক আচরণের প্রেক্ষিতে আইনজীবী সমিতি তৎক্ষণাৎ জরুরী সাধারণ সভা আহ্বান করে। সভায় চার দফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে-
- উক্ত নেশাখোর, চাঁদাবাজ, ঘুষখোর ইউসুফকে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে।
- যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত ইউসুফ গ্রেফতার না হয় এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না হয় ততক্ষণ কোনো কোর্টে কোনো আইনজীবী বিচারকাজে অংশগ্রহণ করবে না।
- যারা কোর্টে এবং বিভিন্ন অফিস কক্ষসহ সকল এজলাসে তালা লাগিয়ে সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করতে হবে এবং
- বিচারঙ্গনের ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।
যতক্ষণ এসব দাবি পূরণ করা হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ এর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং কোর্ট বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে সমিতির পক্ষ থেকে।