রাজধানীতে ‘লও ঠেলা’ গ্রুপের ৯ সদস্য গ্রেফতার

দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম, মাদক কেনাবেচা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি কার্যক্রম চালিয়ে আসা লও ঠেলা’ নামে একটি কিশোর গ্যাং এর মূল হোতাসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। অপরাধ করেই ক্ষান্ত হত না গ্রুপটি, এসব অপকর্মের দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারও করত তারা।

মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) ‘লও ঠেলা’ গ্রুপের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই দলের হোতা বাবু ওরফে দশের বাবু। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন- ফোরকান, পলাশ, সুমন, সাগর, রাজন, নাজিম, শাকিল ও মিলন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ছুরি, চাপাতি ও স্টিলের পাইপসহ দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকায় একদল সন্ত্রাসী দোকানপাট, বাড়িঘর ভাঙচুর ও ছিনতাই করে। গত ১৬ জানুয়ারি আবারও নবীনগর হাউজিং এলাকায় মারামারি, ভাঙচুর, ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ‘লও ঠেলা’ গ্রুপের এসব সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

দশের বাবু ২০০০ সালে মায়ের সঙ্গে নড়াইল থেকে ঢাকায় আসে। পরে তিনি গাড়ির হেলপার, হোটেলের পরিচ্ছন্ন কর্মীর চাকরিসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ছিল। এক পর্যায়ে তিনি মাদকাসক্ত হয়ে মাদকের টাকার জন্য ছোট ছোট চুরি-ছিনতাই শুরু করে।

লে. কর্নেল আবু নাঈম তালাত জানান, ২০১৪ সালে কিশোর গ্যাং ‘ভাইব্বা ল কিং’-এ যোগ দেওয়ার পর বাবুর অপরাধের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এক সময় তার কুখ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অপরাধ জগতে সে দশের বাবু নামে খেতাব পায়। পরবর্তী সময়ে ‘ভাইব্বা ল কিং’ গ্রুপ থেকে আলাদা হয়ে ২০১৭ সাল থেকে ‘লও ঠেলা’ নামে নিজস্ব গ্রুপ গড়ে তোলে বাবু।

র‍্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, আটক বাবু বখে যাওয়া ছেলেদের তার গ্রুপে নিতো। ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ত তার এই গ্রুপ। এছাড়া জবর দখল, ভাড়ায় শক্তি প্রদর্শন এবং আধিপত্য বিস্তারসহ নানা অপকর্মে তাদের ব্যবহার করেন বাবু। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, দস্যুতা, মাদক ও ছিনতাইসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে।

আটক অন্যরা সবাই ক্ষুদ্র ব্যবসা, অটোচালক, রিকশাচালক, গাড়িচালক, দিন মজুরসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আটক ফোরকানের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি, পলাশের নামে হত্যা চেষ্টা আইনে একটি ও শাকিলের নামে একটি মাদক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান র‌্যাব-২ এর অধিনায়ক।