চাকরি ফেরত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন বরখাস্ত হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। রিটে দুদকের চাকরি বিধিমালা ২০০৮-এর ৫৪(২) বিধি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
আজ রোববার (১৩ মার্চ) ব্যারিস্টার মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় শরীফের পক্ষে এ রিট দায়ের করেন। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
রিটে দুদক সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, আইন সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটের বিষয়টি আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ ইশতিয়াক নিজেই গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কোনো কারণ না দর্শিয়ে যেকোনো কর্মচারীকে অপসারণ করার ৫৪ (২) বিধিতে দুদকের যে ক্ষমতা এটা সংবিধান পরিপন্থী। এ কারণে এ বিধির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। আর এ বিধির অধীনে শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে ১০ আইনজীবীর রিটের আদেশের জন্য আগামী ১৫ মার্চ দিন ধার্য রয়েছে।
গত ১০ মার্চ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এদিন ধার্য করেন।
এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আলোচিত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণের বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ১০ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারী ১০ আইনজীবী হলেন, মোহাম্মদ শিশির মনির, রেজওয়ানা ফেরদৌস, জামিলুর রহমান খান, উত্তম কুমার বণিক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. তারেকুল ইসলাম, মীর ওসমান বিন নাসিম, সৈয়দ মোহাম্মদ রায়হান, মো. সাইফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ নওয়াব আলী।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের অপসারণের বিষয়টি জানানো হয়।
এরপর চাকরি ফিরে পেতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন সংস্থার চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি দুদক চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত আবেদনটি করেন।
লিখিত আবেদনে শরীফ উদ্দিন বলেন, ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনি দুর্নীতির বিভিন্ন মামলার অনুসন্ধান ও তদন্ত করেছেন সুনামের সঙ্গে। বিশেষ করে কক্সবাজারের ভূমি অধিগ্রহণের দুর্নীতি, রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের দুর্নীতি, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের দুর্নীতি, ময়মনসিংহ ভূমি অফিসের দুর্নীতিসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজদের চিত্র কর্মরত অবস্থায় তুলে ধরেছিলেন তিনি, যাতে দেশ দুর্নীতিমুক্ত থাকে।
এসব কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজে ও তার পরিবার নানা হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু তারপরও দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে আপস করেননি বলেও আবেদনে উল্লেখ করেন শরীফ উদ্দিন।