পূবালী ব্যাংক থেকে ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। নিয়ম অনুযায়ী ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে করেছেন ইন্স্যুরেন্সও। সম্প্রতি গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সংশ্লিষ্ট গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণে ক্লেইম করেন।
বিপত্তি বাধে এখানে। প্রায় তিন মাস ঘুরেও গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে সাড়া পাননি এই আইনজীবী। অতঃপর বাধ্য হয়ে কোম্পানির অফিসে যান তিনি। অফিসে গিয়ে জানতে পারেন ইন্স্যুরেন্সে তার গাড়ি বাবদ জমা পড়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। বাকি প্রায় লাখ খানিক টাকার হদিস নেই। বুঝতে বাকি রইল না যে ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট এই টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এপ্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে কথা বলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের সাবেক এই কৌঁসুলি। এসময় বীমা কোম্পানির দালাল, ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তিতে ভোগান্তির বিষয়গুলো তুলে ধরেন তিনি।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, পৃথিবীর সব ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো যেখানে দিন দিন বড় হচ্ছে, আমাদের দেশের বীমা কোম্পানিগুলো সেখানে খারাপ পার্ফরমেন্সের পসরা সাজিয়ে বসেছে। এসব নাম সবস্ব কোম্পানিতে পরিণত হচ্ছে। এদের কার্যক্রম এতো খারাপ যে এক সপ্তাহ আগে আমাকে কোম্পানি থেকে ফোন করে বলা হয় আমার ক্লেইম করা বিষয়টি রেডি, আসলেই পেয়ে যাব। অথচ আজ ৮ দিন পর এসেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি।
এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে কোম্পানির পক্ষ থেকে কোন সদুত্তর পাননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের টেন্ডেন্সি হচ্ছে, এমনভাবে গ্রাহককে জ্বালা-যন্ত্রণা দিবো যেন আর কখনো কোন ক্লেইম নিয়ে না আসো। ইন্স্যুরেন্স মানে হচ্ছে একবার টাকা জমা হয়ে গেল তো, আর ফেরতের নাম নাই।
নিজের সমস্যা সাধারণ তুলে ধরেন না উল্লেখ করে ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে কখনো কথা বলি না, কিন্তু এ বিষয়টি তুলে ধরা উচিত বলে মনে করেছি। কারণ বহু সাধারণ মানুষ আছেন যারা ইন্স্যুরেন্সের খপ্পরে পড়ে নানা ভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন।
একজন আইনজীবীকে এভাবে ভোগান্তির শিকার হতে হলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কি হয়রানিমূলক হতে পারে সেটা বুঝতে আর বাকি থাকে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এসময় ফারইস্ট ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগের বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি।
পরিশেষে বীমা কোম্পানির আচরণ সহ্য করার মতো না উল্লেখ করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, সরকারের কাছে দাবি জানাই, বীমা কোম্পানির নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ যেন গ্রাহককে হয়রানি করা এসব ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানিগুলোর দিকে নজরদারি বৃদ্ধি করেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।