ভেজাল বীজের কারণে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের হাওরে কয়েক হাজার একর জমির ফসল বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত এমন একটি সংবাদ দৃষ্টিগোচর হয় বিচারকের।
জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় স্বপ্রণোদিত হয়ে সংবাদটি আমলে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) হবিগঞ্জের ২নং আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন।
বানিয়াচং উপজেলার কৃষি কর্মকর্তাকে ঘটনাটি তদন্ত করে আগামী ১০ মে তারিখের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে।
প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, জেলার বানিয়াচং উপজেলার ইকরাম সুজাতপুর হাওরের বিস্তৃর্ণ মাঠজুড়ে বোরো ফসল আবাদ করেছেন হাজারো কৃষক। প্রতি বছর ফলন ভালো হলেও এ বছর অধিকাংশ জমিতে অর্ধেক চারায় ধান গজিয়েছে আর অর্ধেক চারায় গজায়নি। এসব চারায় আর ধান গজানোর কোনো সম্ভাবনাও নেই।
তাছাড়া হাওরে বছরে একবারই ধানের চাষ হয়। এসব জমির উৎপাদিত ধানের ওপর নির্ভরশীল কৃষকরা। কিন্তু ভেজাল বীজের কারণে এ বছর ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষকরা দাবি করছেন, মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে জমি বর্গা চাষ করেছিলেন। কিন্তু ধান নষ্ট হওয়ায় এখন পথে বসছেন তারা।
প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে আদালত দেখতে পান স্থানীয় ডিলাররা ভেজাল বীজ সরবরাহ করায় কৃষকদের ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এই অভিযোগ বীজ আইন, ২০১৮ এর ধারা ১০, ১১, ১৩, ১৪ ও ১৫ মতে অপরাধ এবং ধারা ২৪ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য ও বিচারযোগ্য হয়।
এপ্রেক্ষিতে আদালতের কাছে জনস্বার্থে ও ন্যায় বিচারের উদ্দেশ্যে অপরাধ উদ্ঘাটন, ভেজাল বীজ সরবরাহকারী আসামীদের চিহ্নিতকরণ, প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন মর্মে প্রতীয়মান হয়।
এজন্য সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯০(১)(সি) ধারায় সংবাদটি আমলে নিয়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার কৃষি অফিসার সরেজমিনে তদন্ত করতে আদেশ দেন। সেই সাথে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী ১০ মে তারিখের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।