প্রচলিত আইন ও প্রথা অনুযায়ী ভরণপোষণ হচ্ছে স্বামীর জন্য দায়িত্ব এবং স্ত্রীর জন্য অধিকার। ফলে বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য থাকা-খাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, চিকিৎসা ও জীবনধারণের জন্য অন্যান্য যত উপকরণ প্রয়োজন স্ত্রী তা স্বামীর কাছ থেকে পাওয়ার অধিকারী হন।
কিন্তু ভারতের মহারাষ্ট্রের বম্বে হাইকোর্ট এ বিষয়ে ব্যতিক্রমী এক রায় দিয়েছে। খোরপোশের একটি মামলায় অধস্তন আদালতের রায় বহাল রেখে গত বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) এক আদেশে বম্বের উচ্চ আদালত জানিয়েছে, আবেদনকারী প্রাক্তন স্বামীকে প্রতি মাসে নির্ধারিত অর্থ খোরপোশ দেবেন তাঁর চাকুরিরতা স্ত্রী। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ের নিম্ন আদালত পেশায় শিক্ষিকা ওই মহিলাকে প্রতিমাসে তিন হাজার টাকা করে স্বামীকে খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। নির্দেশ না মানায় ২০১৯ সালে আদালত আর একটি নির্দেশ জারি করে।
এতে মহিলার স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বলা হয়, শিক্ষিকার বেতন থেকে ৫ হাজার টাকা করে প্রতি মাসে কেটে নিয়ে তা আদালতে জমা করতে। ২০১৭ সালের খোরপোশের নির্দেশের পরে বকেয়া হিসাবে ওই টাকা মহিলার স্বামীর প্রাপ্য।
নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বম্বে হাইকোর্টে মামলা করেন মহিলা। শুনানি শেষে বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ পুরনো রায় বহাল রেখেছে। বিচারপতি ভারতী ডাংরে জানিয়েছেন, ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী ওই শিক্ষিকা প্রাক্তন স্বামীকে খোরপোশ দেবেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯২ সালে ওই দম্পতির বিয়ে হয়। তাঁদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। যে মায়ের কাছে থাকে। ২০১৫ সালে আদালতে দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। তার পরে খোরপোশের আবেদন জানিয়ে মামলা করেন মহিলার প্রাক্তন স্বামী।
তিনি জানান, স্ত্রীর জন্য নিজের উচ্চাশা ছেড়েছেন তিনি। স্ত্রীর পাশে থেকে ঘর সামলেছেন। এখন তিনি অসুস্থ। কোনও উপার্জন নেই। তাঁর নামে কোনও স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তিও নেই। তাঁর স্ত্রী নানা ভাবে তাঁকে হেনস্থা করে, অসদুপায়ে বিচ্ছেদ নিয়েছেন।
স্বামী আরও জানান, ওই শিক্ষিকা মাসে ৩০ হাজার টাকা করে বেতন পান। নিজের নামে স্থাবর সম্পত্তিও রয়েছে। ফলে আইন অনুযায়ী, মাসোহারার আবেদন করেন ওই ব্যক্তি।