মো. রিয়াদ আরিফিন: যেকোনো পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের প্রতি বিরুপ আচরণ, সহিংসতা কিংবা বিদ্বেষ দেখতে পাওয়াটা অনাকাঙ্ক্ষিত তবে বিশেষ আশ্চর্যের বিষয় নয়। পুরুষতন্ত্র যেখানে রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করবে তখন নারীদের পিছিয়ে পড়াটা নেক্বারজনক তবে বিস্ময় জাগানিয়ার মত ব্যপারও নয়। সে সমাজে যদি নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতার কথা বলা হয়েও থাকে তার কতটুকুই বা তারা স্বাদ গ্রহণ করতে পারে! আর পারলেও বা কত অপবাদ, গঞ্জনা আর অসম্মানের শিকার হতে হয় তা সবারই অনুমেয়।
তবে একবার ভাবনার উদ্রেক ঘটালে দেখা যাবে, ঠিক এমনই এক পরিবেশে পুরুষ নির্যাতিত হচ্ছে, লাঞ্চিত হচ্ছে যার প্রতিকার তো মিলছেই না বরং অনেক ক্ষেত্রে তাদের অপমানের শিকার হতে হচ্ছে। মনে হতে পারে এটাও কি সম্ভব? হ্যাঁ বোধক উত্তর দেওয়াটা হতাশাজনক তারপরও এদেশের আইনি ব্যবস্থাতেও পুরুষদের কতিপয় নির্যাতনের প্রকৃতপক্ষে তেমন প্রতিকার নেই বললেই চলে। এসব নির্যাতন থেকে রেহায় পেতে পুরুষরা কোথায় যাবে? আইনি ব্যবস্থায় কি ধরনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন? কিংবা সেক্ষেত্রে সমাজের মানুষের কি ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিই বা রাখা উচিৎ? এই সব নির্যাতনের ক্ষেত্রে কি ধরনের প্রতিকারই বা হতে পারে?
পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে
Bangladesh Men’s Rights Foundation (BMRF), যে সংস্থাটি ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, তাদের প্রকাশিত এক গবেষণার মতে, বাংলাদেশের বিবাহিত পুরুষদের ৮০ শতাংশই মানসিক নির্যাতনের শিকার। তাদের মধ্যে এক মাজেদ ইভানা আজাদ, যিনি ঢাকাতে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন।
তিনি বলেন, তার স্ত্রী তাকে অনেক বছর ধরে মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। তবে এই সমস্যা থেকে বের হওয়ার জন্য কারো কাছ থেকে সাহায্য পেতেন না কারণ সমাজ এটা মানতে নারাজ যে এমনকি পুরুষও নির্যাতনের শিকার হতে পারে৷
তিনি আরো বলেন, তার স্ত্রী তাকে ভালবাসার ফাঁদে ফেলে তাকে বিবাহ করতে বাধ্য করে ও পরবর্তীতে শুধু অর্থ দাবি করতে থাকে এবং তিনি পরবর্তীতে এও বুঝতে পারেন তার স্ত্রীর আরো অনেকের সাথেই সম্পর্ক আছে যারাও তারই মত শিকার মাত্র। তখন তিনি টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে তার স্ত্রী তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এর অধীনে মামলা করেন।
এর ফলশ্রুতিতে তিনি ভিক্টিম থেকে অ্যাক্টিভিস্টে পরিণত হন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন তার মত অনেকেই আছেন যারা পারিবারিক নির্যাতনের শিকার। তিনিই এখন BMRF এর সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনটি বিশ্বাস করে যেখানে নারীদের প্রতি পারিবারিক সহিংসতা রোধে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ করা হয়েছে ঠিক তেমনই পুরুষদের জন্যেও এমন একটি নিরপেক্ষ আইন প্রণয়ন করা জরুরি। কারণ যেখানে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ দেখিয়েছে অন্তত ৪৬২২টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে নারীদের ক্ষেত্রে সেখানে পুরুষরা তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রকাশও করতে পারেনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন সানজিদা আক্তার বলেন, পুরুষরা প্রধানত পারিবারিক সহিংসতার অপরাধী, কিন্তু তারা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এর শিকারও হতে পারেন। তিনি আরও বলেন, পুরুষদের উপর পারিবারিক সহিংসতার কোন বিশেষ গবেষণা বা পরিসংখ্যান আমরা এখনো দেখিনি যেটা অন্যতম কারণ হতে পারে তারাও সহিংসতার শিকার হচ্ছে এটা চিন্তা করা ছাড়াও যে তারা পুরুষ।
ধর্ষণের ক্ষেত্রে
পুরুষ আধিপত্যের এই সমাজে লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে সাধারণভাবে নারীরা ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধরনের সহিংসতার শিকার হয় এবং স্বাভাবিকভাবেই নারীর প্রতি সংঘটিত সহিংসতার প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে। অন্যদিকে আধিপত্যবাদের স্বাভাবিক প্রবণতাই যেহেতু বিভিন্ন কারণে দুর্বল বিবেচিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ওপর অপেক্ষাকৃত সবল ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি ও গেষ্ঠির খবরদারি, নির্যাতন এবং নিপিড়ন ক্ষেত্রবিশেষে ক্ষমতা বিবেচনায় দুর্বল অবস্থানে থাকা পুরুষও নির্যাতনের ও নিপিড়নের শিকার ও সম্মুক্ষীন হয় ৷ তাই নারী ও মেয়ে শিশুর পাশাপাশি ছেলে শিশু ও পুরুষদেরকেও বিভিন্ন সময় ধর্ষণসহ বিভিন্ন নির্যাতন নিপিড়নের শিকার হতে দেখা যায়। সেক্ষেত্রে পুরুষ ধর্ষণের প্রতিকার কোথায়?
গত ১০ এপ্রিল ২০২১ তে দৈনিক সমকালে প্রকাশিত হয় যে, মাদ্রাসায় ১৫ মাসে ৬২ ছেলে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। অন্যদিকে ৬ অক্টোবর ২০২১ ঐ একই পত্রিকা প্রকাশ করেছিল বন্ধুকে ধর্ষণের ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। শুধু নারীর মাধ্যেমই নয়, পুরুষের মাধ্যেমও পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকে৷ তাছাড়া হিজড়া জনগোষ্ঠীও বিভিন্ন সময় ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকে৷
বিদ্যমান আইনি প্রক্রিয়া দেখতে গেলে দেখা যাবে, নারী ও শিশু নির্যাতন আইন, ২০০০ এর অধীনে ধারা ২(ঙ), (ট) এবং ধারা ৯ যেটা দন্ডবিধির ধারা ৩৭৫ কে নির্দেশ করে, এই ধারাগুলাকে সামগ্রিকভাবে ব্যাখ্যা করলে (wholistic approach of interpretation) দেখা যাবে, নারীর পাশাপাশি ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত মেয়ে এবং ছেলে উভয় শিশুদের প্রতি সংঘটিত ধর্ষণসহ বিভিন্ন যৌন নির্যাতনের বিচারিক প্রতিকার পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ১৬ বছরের বেশি বয়সের ছেলে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ওপর সংঘটিত ধর্ষণের বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট আইনি বিধান নাই৷
আমাদের দেশের ধর্ষণসম্পর্কিত প্রচলিত ফৌজদারি আইনে সুস্পষ্টভাবে পুরুষ ধর্ষণ বা বৈচিত্রময় বিভিন্ন লিঙ্গ পরিচয়ের (হিজড়া জনগোষ্ঠী) ব্যক্তির ধর্ষণের বিষয়টি উল্লেখ নাই৷ তাদের বিচার প্রাপ্তির একমাত্র উপায় হলো দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা- ৩৭৭, যেখানে অস্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক নিয়ম বিরুদ্ধ বিবেচনায় সমলিঙ্গের মধ্যে সংঘটিত যৌন সহবাস এবং কোন ব্যক্তি কর্তৃক কোন পশুর সঙ্গে যৌন সঙ্গমকে অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এই ধারা প্রবর্তনের পিছনে ব্রিটিশদের অভিপ্রায় ছিল সমলিঙ্গের মধ্যে সঙ্গম রোধ করা।
যেটা বর্তমানে ভারত বাতিল ঘোষণা করেছে নাজ ফাউন্ডেশন মামলার রায়ের মাধ্যমে। এই ধারার মাধ্যমে ধর্ষণের প্রতিকার হতে পারেনা। পুরুষ ধর্ষণকেও ধর্ষণের ধারনার মধ্যে আনা অতীব জরুরি নয়তো এ সহিংসতা নারী ধর্ষণের মতই মহামারী রুপ ধারণ করবে। আর এজন্য দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ৩৭৫ অবিলম্বে সংশোধন জরুরি।
আবার বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে যেহেতু বিয়ের বৈধতার ব্যাপারে কোন সন্দেহ প্রকাশ করে না বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ এবং শারিয়া আইন অনুযায়ী অবকাশের কোন কারণ নাই, সেহেতু বিবাহ সম্পর্কে থাকা অবস্থায় ধর্ষণের ক্ষেত্রে দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ৩৭৫ এর ব্যতিক্রম অনুযায়ী ১৩ বছরের নিচের মেয়ে শিশুর ক্ষেত্রে স্বামীর যেকোনো ধরণের সঙ্গমকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় যেটা ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ধারা ৫৬১ অনুসারে নির্ণয় করা হয়। কিন্তু ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে তেমন কোন ইঙ্গিত নেই কারণ দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ৩৭৫ শুধু নারী ধর্ষণকেই স্বীকৃতি দেই। তাই মেরিটাল রেপের (বৈবাহিক ধর্ষণ) ক্ষেত্রে নারী শিশুর সীমিত প্রতিকার থাকলেও পুরুষ শিশুর ক্ষেত্রে তা নাই। আর মেরিটাল রেপের এই দৃষ্টিভঙ্গিও জেন্ডার বায়াজ (Gender Bias) হওয়া কাম্য।
বিবাহ বহির্ভূত অপরাধ প্রসঙ্গ
বিবাহ বহির্ভূত অত্যন্ত গর্হিত সম্পর্ক যেটাতে একজন বিবাহিত পুরুষ বা মহিলা অন্য একজনের বা একাধিক ব্যক্তির সম্পর্কে বোঝায় যিনি ঐ নারী বা পুরুষের বিবাহিত স্বামী বা স্ত্রী নয়। এ গর্হিত সম্পর্কের ফলে সমাজে বিবাহ বিচ্ছেদ থেকে শুরু করে আত্মহনন, খুন জখমের মত ভয়াবহ অপরাধও সংগঠিত হয়ে থাকে। এদেশের আইনি কাঠামোতে এধরনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ক্ষেত্রে পুরুষদেরকেই দায়ী করা হয় এবং যার ফলে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পুরুষই ক্ষতির শিকার হয়ে থাকে। এ সংক্রান্ত বিধান লক্ষনীয় দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ধারা ৪৯৩ থেকে ৪৯৮ ধারার মধ্যে। এই ধারাগুলো প্রণয়ন করার সময় প্রণয়নকারী ব্রিটিশরা ভেবেছিলেন নারীরা অবলা এবং তাদের বিরুদ্ধে এই ধরণের অপরাধ হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে এখন যুগপাল্টেছে, এই ধরনের অপরাধ এখন উভয় দিক থেকেই সংগঠিত হতে পারে৷
উদাহরণস্বরূপ ধরা যাক, জনাব আক্তারের স্ত্রী হোসাইন সাহেবের সাথে ছক কষে পলায়ন করলেন এবং অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাদেরকে পাওয়া গেল। এখন জনাব আক্তার কিন্তু শুধু হোসাইন সাহেবের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন ধারা ৪৯৮ অনুযায়ী কিন্তু তার স্ত্রীর মত বা ইচ্ছা যাই থাকুক না কেন পলায়নের ক্ষেত্রে সে যুক্তি প্রমাণ করা কষ্ট সাপেক্ষ বিষয়।
প্রণয়ঘটিত ব্যাপারে আস্থাভঙ্গ প্রসঙ্গ
বর্তমান যুগে একজন আরেক জনকে দেখে পছন্দ হয়ে প্রণয় ঘটা অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। আর যেখানে প্রণয় থাকবে সেখানে আস্থাভঙ্গ হওয়াটাও স্বাভাবিক। তবে এর প্রতিক্রিয়া নারী বা পুরুষ কারো জন্যেই স্বাভাভিক হয় না। ক্ষেত্রবিশেষে নারী পুরুষ উভয়ের উপরই এই আস্থাভঙ্গের প্রভাব দেখা দিলেই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ হওয়ার দরুন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষকেই এই আস্থাভঙ্গের মাশুল গুনতে হয়। আর এই আস্থাভঙ্গের প্রতিকারের ব্যাপারে আইনি প্রতিকার খুবই অস্পষ্ট এবং সামান্য থাকলে সে প্রতিকার লাভ করা কষ্টসাধ্য।
অনেকেই এটাকে শুধুই ফৌজদারি অপরাধ বিবেচনা করেন এবং দন্ডবিধির, ১৮৬০ এর ধারা ৪০৬ এর অধীনে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করেন। তবে এই ধারা অত্যন্ত সংকীর্ণ গণ্ডিতেই বিবেচনা করা হয়, যার ফলে এই ধারার অধীনে এই ধরণের বিচারের প্রতিকার পাওয়া কষ্টসাধ্য কাজ।
এছাড়া দেওয়ানি ক্ষতি বিবেচনা করলে পাওয়া যায়, যদিও আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে প্রণয়ের সম্পর্কের মধ্যে কন্সিডারেশন নাই তবুও বেশিরভাগ প্রণয়ের সম্পর্কই গড়ে ওঠে বিয়ের কন্সিডারেশনে। আর এদিক দিয়ে বিবেচনা করলে চুক্তি আইন, ১৮৭২ এর ধারা ২ অনুযায়ী প্রণয়ের এই সম্পর্ককে চুক্তি হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। আর কেউ এক্ষেত্রে আস্থাভঙ্গ করলে বা চুক্তিভঙ্গ করলে অপরজন সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭ এর অধীনে চুক্তি সম্পাদনে বাধ্য করতে মামলা দায়ের করা যেতে পারে। সেই সাথে যদি টর্ট আইন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত বা ডেভলপ হতো তাহলে টর্ট আইনের অধীনে জীবনের প্রত্যাশা (Expectation of Life) দাবি করে ক্ষতিপূরণ আদায় করা যেত যথোপযুক্ত অ্যাডভোলারেম কোর্ট ফি জমা দিয়ে কোর্ট ফিস আইন, ১৮৭০ এর অধীনে ৷
১৯২১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে “হেলেন গ্রুবার্ট বনাম সুরজিৎ” মামলা এক্ষেত্রে প্রণিধানযোগ্য নজির হতে পারে যেখানে মিস হেলেন গ্রুবার্ট ১০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছিলেন এবং মামলা জিতেছলেন। আর তাই এই বিষয়ে বিশেষ কোনো প্রিন্সিপাল প্রতিষ্ঠিত হওয়া সময়ের দাবি।
তাছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর কতিপয় ধারা, দন্ডবিধির ধারা ৩৫৪, ধারা ৫০৯ নারীদের যেমন অবাধ সুরক্ষা প্রদান করেছে ইভ টিজিং থেকে রক্ষা পেতে, ঠিক কিছু ক্ষেত্রে তা পুরুষদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার পিছনেও হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কারণ হিসেবে বলা যেতে পারে কোন ধরনের বক্তব্য বা অঙ্গভঙ্গি কারো সম্মান বা শ্লীলতাহানি ঘটাতে পারে তার যথার্থ সংজ্ঞা আইনে সুস্পষ্টভাবে প্রদান করা হয় নাই। আবার পুরুষদের বিরুদ্ধে কেউ একই আচরণ করলে বা অ্যাডাম টিজিং (Adam Teasing) করলে তার কোন প্রতিকার বিদ্যমান আইনে নাই, যার প্রয়োজনীয়তা সমাজে রয়েছে।
মন্তব্য
সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিকেরই আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার আছে তাই পুরুষদের তাদের যেকোন নির্যাতনের বিচারিক আইনি প্রতিকার লাভের অধিকার আছে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৮ অনুযায়ী কোন ধরনের বৈষম্য কাম্য নয়, তবে বিশেষ প্রয়োজনে নারী ও শিশুদের জন্য বিশেষ বিধান প্রণয়ন করতে পারে। তবে সেই সাথে প্রকৃত বিদ্যমান উদ্ভূত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে আইনি প্রতিতকার পাওয়াটাও যেকোন পুরুষের সাংবিধানিক অধিকার।
লেখক: শিক্ষার্থী; আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।