গৃহকর্মীর কাজের নামে তরুণীকে জিম্মি করে ধর্ষণ ও পতিতার কাজ করানোর অভিযোগে রাজধানীর মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জামাল উদ্দিন মীরসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে।
ঢাকার মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে রোববার (১০ এপ্রিল) ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল মামলাটি গ্রহণ করে অভিযোগ তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অপর আসামিরা হলো- কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৩৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. জাভেল হোসেন পাপন, মো. মোখলেছ, মো. আনিসুল বাসার রতন, মো. জসিম, মো. কবির ওরফে মিয়াজ, মো. আলাউদ্দিন ও মোসা. আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরী।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ভুক্তভোগী তরুণী লঞ্চে করে ঢাকা আসার পথে আসামি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৩৭ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. জাভেল হোসেন পাপন, মো. মোখলেছ ও কবির ওরফে মিয়াজের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরপর তারা আসামি আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরীর বাসায় ভুক্তভোগী তরুণীকে ঝিয়ের কাজ করায়। অতঃপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ভুক্তভোগী তরুণীকে জিম্মি করে তাকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতো।
এছাড়া আসামিরা ঝিয়ের কাজের কথা বলে দীর্ঘদিন যাবৎ তাকে আটকে রেখে জোরপূর্বক পতিতার কাজ করিয়ে আসছিল। এ মামলার আসামি আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরী ভুক্তভোগী তরুণীর কথিত নানী সেজে অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় গত ২৯ মার্চ আসামি কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, মো. মোখলেছ ও কবির ওরফে মিয়াজসহ অজ্ঞাত ২/৩ জন জোরপূর্বক পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে।
পরে ভুক্তভোগী তরুণী আসামিদের জিম্মি দশা থেকে কৌশলে পালিয়ে মুগদা থানায় হাজির হন। সেখানে কর্তব্যরত কর্মকর্তা ঘটনার বিবরণ জানিয়ে মামলা গ্রহণের অনুরোধ করেন। কিন্তু মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভুক্তভোগী তরুণীর ধর্ষণ মামলা না নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেন এবং তাকে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে থানা থেকে জোরপূর্বক বের করে দেন।
একইদিন ভুক্তভোগী তরুণী মুগদা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করে ঘটনার বিবরণ জানান। তখন ভুক্তভোগী তরুণীকে আবারও মুগদা থানার ওসির কাছে পাঠানো হয়। আবারও সেখানে গেলে মামলা না নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে বের করে দেওয়া হয়।