কক্সবাজারের প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে থাকা অবকাশ পর্যটন লিমিটেডের পরিবেশগত ছাড়পত্রহীন ‘সেন্টমার্টিন রিসোর্ট’ অবিলম্বে বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদপ্তরকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছে আদালত।
এ বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে আজ বুধবার (২০ এপ্রিল) রায় দেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে অবকাশ পর্যটনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মারগুব কবির। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পরে বেলা জানায়, প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে রক্ষার স্বার্থে অবৈধভাবে নির্মিত সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণ এবং প্রবাল, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপ অন্যান্য জলজ প্রাণীর অনিয়ন্ত্রিত আহরণ বন্ধে বেলা ২০০৯ সালে একটি রিট করে।
সেই রিটের চূড়ান্তর শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট । রায়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ভেঙে ফেলার এবং কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীসংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ নির্দেশ পালনে পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে ওঠা অন্যান্য স্থাপনাগুলোর সঙ্গে অবকাশ পর্যটন লিমিটেডের সেন্টমার্টিন রিসোর্ট উচ্ছেদের নোটিশ দেন। পরে অবকাশপর্যটন লিমিটেডের সেন্টমার্টিন রিসোর্টের অনুকূলে পরিবেশগত ছাড়পত্র দিতে অনলাইনে পরিবেশ অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করলে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে আবেদনটি বাতিল করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
আবেদন বাতিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে রিট করে অবকাশ পর্যটন লিমিটেড। তখন আদালত রুল জারি করেন। রুলে পরিবেশ অধিদপ্তরের দেওয়া সেন্টমার্টিন রিসোর্ট ভেঙে ফেলার নোটিশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং এ প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিবেশগত ছাড়পত্র দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে বেলা এ মামলায় পক্ষভুক্ত হন।
রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল খারিজ করে আজ রায় দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আদালত পরিবেশগত ছাড়পত্রবিহীন সেন্টমার্টিন রিসোর্ট নামক প্রতিষ্ঠানটির সব কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ রাখতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন।