সই করা ফাঁকা চেক (blank cheque) বাংলাদেশে ব্ল্যাকমেইল করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার উল্লেখ করে এ ধরণের চেক প্রদানে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, কাউকে সই করা ব্ল্যাংক চেক দেওয়া মানে নিজের স্বাধীনতা চেক গ্রহীতার কাছে সমর্পণ করা।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ সতর্কতামূলক পরামর্শ দেন। এসময় পারতপক্ষে কাউকে ব্ল্যাংক চেক না দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
দেশের জনগণ চাকরি, ঋণ কিংবা ব্যবসায়িক কাজে সিকিউরিটি চেকের নামে সই করা ফাঁকা চেক দিয়ে থাকেন উল্লেখ করে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, এই ব্ল্যাংক চেকের কি পরিণাম হতে পারে এ সম্পর্কে আপনাদের ধারণা নাই। সম্পর্ক যখন খারাপ হবে তখন ওই পক্ষ নিজের ইচ্ছামত টাকার অংক বসিয়ে দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কেউ ১ লাখের জায়গায় ৩০ লাখ টাকাও বসিয়ে দেয় তাহলেও চেকদাতার কিছুই করার থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক এই প্রসিকিউটর বলেন, নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এই বাংলাদেশে কেউকে দুর্বল করার সবচেয়ে বড় অস্ত্র ব্ল্যাংক চেক। কারণ কারো কাছে আপনার স্বাক্ষর করা ব্ল্যাংক চেক থাকলে টাকার অংকে ২ কিংবা ৫ কোটি টাকা বসিয়ে দিলে ওই টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মুক্তি পাবেন না।
ব্যারিস্টার সুমন আরও বলেন, চেকের মামলায় কেন বা কি কারণে ব্ল্যাংক চেক দিয়েছেন সেই বিষয়টি বিচার্য বিষয় নয়। এ মামলায় সাধারণত দেখা হয় এই চেক আপনি দিয়েছেন কিনা, চেকের স্বাক্ষর আপনার কিনা এই বিষয়গুলো ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী বলেন, চেক প্রতারণার মামলায় কারো বিরুদ্ধে রায় হয়ে গেলে, রায়ে উল্লেখিত টাকার অন্তত অর্ধেক টাকা আদালতে জমা দিতে না পারলে আপীলই করার সুযোগ নেই। আর জামিনও পাবেন না।
প্রচলিত আইনে ব্ল্যাংক চেক নেওয়া অন্যায়। কেউ ব্ল্যাংক চেক চাইলে দিবেন না। চেক দেওয়ার প্রয়োজন হলে সেখানে প্রত্যাশিত টাকার অংক উল্লেখ করে তবেই চেক দেবেন, যোগ করেন তিনি।