কক্সবাজারের একটি মানব পাচার মামলায় ছোট ভাইকে দেখিয়ে হাইকোর্ট থেকে বড় ভাইয়ের জামিন নেওয়া সেই ছোট ভাই গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাতে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব-১৫-এর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-অধিনায়ক মেজর মনজুর মেহেদী ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার মো. রফিকুল ইসলাম (১৫) কক্সবাজারের রামু উপজেলার চাকমারকুল এলাকার মৃত মো. ইলিয়াসের ছেলে। রফিকুলের বড় ভাই আলাউদ্দিন মানব পাচার মামলার আসামি। আলাউদ্দিন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
মেজর মনজুর মেহেদী ইসলাম জানান, ২০১৪ সালে রামুর নুরুল ইসলামসহ কয়েকজনকে উচ্চ বেতনে মালয়েশিয়ায় চাকরি দেওয়ার প্রলোভনে সমুদ্র উপকূলে একটি ট্রলারে তুলে দেয় সংঘবদ্ধ মানব পাচারকারী চক্র। ট্রলারটি থাইল্যান্ডে পৌঁছার পর পাচারকারী চক্রের সদস্যের কাছে হস্তান্তর করা হয়। যেখানে নুরুল ইসলামকে শারীরিক নির্যাতন করে আদায় করা হয় চার লাখ টাকা মুক্তিপণ। এরপর নুরুল ইসলামকে পাঠানো হয় মালয়েশিয়ায়।
সংবাদ সম্মেলনে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নুরুল ইসলামকে ওখানে দালালরা আটকে রাখলেও ২০১৭ সালে পুলিশ আটক করে। ওখানে এক বছর কারাভোগ শেষে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে নুরুল ইসলাম দেশে ফেরেন। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে আলাউদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে।
আদালত গ্রেপ্তার পরোয়ানা জারি করলে ২০১৯ সালে ২৮ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আলাউদ্দিন তার ছোট ভাই রফিকুলকে (১২) আলাউদ্দিন সাজিয়ে দাঁড় করিয়ে জামিনের আবেদন জানান। আদালত রফিকুলকে আলাউদ্দিন হিসেবে জামিনও দেন। বিষয়টি জানাজানির পর দেশব্যাপী আলোচনা শুরু হয়।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, এরপর ২০২১ সালের ২৩ এপ্রিল আলাউদ্দিন মামলার বাদীর ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আলাউদ্দিন গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠালেও রফিকুল পালাতক ছিল। রফিকুলকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।