ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে থানা পুলিশের হেফাজতে ব্যবসায়ী নজির আহমেদ সাপুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নিহত ব্যবসায়ী নজির আহমেদ সাপুর স্ত্রী শিরীন সুলতান রিমা বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গত রোববার (৮ মে) এ মামলা দায়ের করেন। সোমবার (৯ মে) জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শারমিন সুলতানা নিগার বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে মামলাটি আদেশের জন্য রাখেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. নাছির মিয়া গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন (২০১৩ ) এ মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করেছেন।
জানা যায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ জুম্মান নামের এক আসামি গত ২১ এপ্রিল রাতে ব্যবসায়ী নজির আহমেদ সাপুর ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় জুম্মানকে আটক করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জুম্মান ও নজিরকে থানায় নিয়ে আসে। এরপর রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ী নজিরের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ব্যবসায়ীর মরদেহ হাসপাতালে রেখেই পুলিশ তড়িঘড়ি করে নজিরের বড়ভাই জাফর আহমেদকে বাদী করে একটি প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর) জমা নেয়।
ওই সময় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। এদিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের মামলায় ওই ১৩ জনসহ সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল এবং এ.এস.আই সাইফুলকে আসামি করা হয়েছে।
আদালতে দায়ের করা মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ঘটনার দিন দুপুরে আসামি মাহফুজ মিয়া, দানু মিয়া, শাহাবুদ্দিনসহ অপর আসামিরা পাড়ার একটি ফার্নিচার দোকানে গিয়ে নজির আহমেদ সাপুর বসতবাড়ির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পাওয়ার খবর জানান। ওই দিন বিকেলে আসামিরা হুমকি দেন, বাড়িতে থাকতে হলে তাদের ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে, তা না হলে বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন রাত আনুমানিক সাড়ে ৯ টায় আসামি জুম্মান ব্যবসায়ী নজির আহমেদের ঘরে প্রবেশ করেন। এ সময় জুম্মানকে আটকের খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। এ সময় আসামিরা জুম্মানকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য নজিরের বাড়িতে হামলা করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নজিরকে জুম্মানের সঙ্গে টেনে হিঁচড়ে থানায় নিয়ে যায়। খবর পেয়ে নজিরের স্বজনরা থানায় গেলে সেখানে গিয়ে জানতে পান নজিরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে তারা নজিরকে মৃত দেখতে পান।
এজাহারে নিহতের স্ত্রী রিমা অভিযোগ করেন, পুলিশ ও অপর আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে তার স্বামীকে হত্যা করেছে।