অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে হাইকোর্ট বলেছেন, এই আদালত এমন নির্দেশ দেবেন যাতে তারা বিশ্বের কোথাও শান্তিতে থাকতে না পারেন।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. এজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৭ মে) এ মন্তব্য করেন।
এ সময় আদালত পি কে (প্রশান্ত কুমার) হালদার ইস্যুতে বলেন, আমাদের নির্দেশনার কারণে পিকে হালদারসহ অর্থ পাচারকারীদের বিষয়গুলো এখন বিশ্বজুড়ে বিভিন্নভাবে আলোচিত হচ্ছে। আমরা অর্থ পাচারকারীদের চিহ্নিত করার পরে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারি। এদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
আদালত রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা শুধু নির্দিষ্ট করে দিন অর্থপাচারকারীরা কোথায় আছেন, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দেব।
পরে আদালত পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে স্বতঃপ্রণোদিত (সুও মুটো) রুলের শুনানির জন্য ১২ জুন দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে পি হালদারের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলার তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পি কে হালদারের বিরুদ্ধে করা মামলার হালনাগাদ বিষয়ে ১২ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক এবং রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদার ২০১৯ সালে চারটি ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১০,২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান। গত শনিবার তাকে পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সোমবার আদালতকে বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পিকে হালদারকে গত ১৪ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট গ্রেপ্তার করেছে।
২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকের ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে রুল জারি করে আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রুলে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং এক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা কেন গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।