সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার আইনজীবীকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এছাড়া আরো দুই আইনজীবীকে জামিন না দিয়ে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই দুজনকে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। তবে এ সময়ের মধ্যে তাদেরকে কোনরূপ হয়রানি না করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (৩০ মে) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া চার আইনজীবী হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট বারের কার্যনির্বাহী সদস্য ও আইনজীবী ফোরামের সদস্য কামরুল ইসলাম এবং তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাগর হোসেন।
আত্মসমর্পণ করতে বলা দুই আইনজীবী হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার বিশেষ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, সহ-দপ্তর সম্পাদক কাইয়ুম
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে ১৮ মে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিএনপিপন্থি ছয় আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।
শাহবাগ থানায় সুপ্রিম কোর্ট বারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান এ মামলা করেন। দুই পক্ষের মারামারিতে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ সমর্থিত অ্যাডভোকেট এন আই প্রামাণিক গুরুতর আহত হন।
মামলার আসামিরা হলেন- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল, বিশেষ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, সহ-দপ্তর সম্পাদক কাইয়ুম, সহ-সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট বারের কার্যনির্বাহী সদস্য ও আইনজীবী ফোরামের সদস্য কামরুল ইসলাম এবং তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সাগর হোসেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, পূর্ব পরিকলনা অনুসারে বুধবার (১৮ মে) সমিতির প্রধান ফটকে প্রতিবাদ সভার নামে বেআইনি সমাবেশ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। ওই সমাবেশ থেকে গাজী কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে বেশ কিছু আইনজীবী ও বহিরাগত ব্যক্তি (আনুমানিক ৫০/৬০জন) দেশীয় অস্ত্রসহ ওপরে উঠে সম্পাদকের কক্ষের সামনে আসেন। তারা সরাসরি সম্পাদকের কক্ষে এবং জানালায় হামলা করেন। তখন সম্পাদক আব্দুন নুর দুলাল কক্ষে তার চেয়ারে বসা ছিলেন। এ সময় আইনজীবী নুরে আলম সিদ্দিকী নেমপপ্লেট খুলে ফেলেন। এছাড়া তারা আওয়াপন্থি আইনজীবী মো. নজরুল ইসলাম প্রামাণিককে আঘাত করেন।