বাড়ি নির্মাণ ও চলাচলের রাস্তার জন্য অবৈধভাবে টিলা (ছোট পাহাড়) কেটে মাটি অপসারণ করে ভূমিরূপ জীব বৈচিত্র ও পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করার অপরাধে দুই ভাইকে জেল-জরিমানা দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
হবিগঞ্জের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিশেষ বিচারক মো. জাকির হোসাইন গত মঙ্গলবার (৩১ মে) এ রায় ঘোষণা করেন। পরিবেশ আইনে এই আদালতের দেয়া প্রথম রায় এটি।
রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দুই আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে দণ্ডিত করা হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত দুই সহোদর হলেন- সবুজ মিয়া এবং সিরাজ মিয়া। তারা দুজনই হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার মৃত হাবিবুল্লার ছেলে।
রায় ঘোষণার দিন আসামী সবুজ মিয়া আদালতে উপস্থিত থাকায় তাকে জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়। এরপর আজ বৃহস্পতিবার (২ জুন) সিরাজ মিয়া আদালতে হাজির হলে তাকেও জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলাধীন বভান মৌজার জেএল নং-২১৫, খতিয়ান নং ১ এর বিভিন্ন টিলা রকম ভূমি পরিদর্শনে গিয়ে ২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত টিলার মাটি কাটা অবস্থায় পান সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন দণ্ডিত আসামিদ্বয় ২০১৫ সালের মে মাস থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে টিলা কেটে মাটি অপসারণ করে নিজের বাড়ি নির্মাণ ও চলাচলের রাস্তার জন্য ব্যবহার করেছেন।
এ ঘটনায় সিলেটের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আবুল মনসুর মোল্লা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করে করেন। এরপর পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত/২০১০) এর ৪, ৬খ, ৯ এবং ১২ ধারা অপরাধে ধারা ১৫(১) এর টেবিলের শাস্তিযোগ্য প্রসিকিউশন আদালতে দাখিল করেন।
মামলার নথি বিচারিক আদালতে আসলে ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনের ৬খ ধারার অপরাধে ধারা ১৫(১) এর টেবিল নং ৫ শাস্তিযোগ্য অভিযোগ গঠন করা হয়।
মামলায় আটজনের সাক্ষ্য গ্রহণ এবং উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে উপরোক্ত রায় ঘোষণা করেন বিচারক।