তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টে তথ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার (৬ জুন) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ৪ ও ১০ ধারা অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টে ‘তথ্য সেল’ প্রতিষ্ঠা করে একজন তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
গত ২৬ মে সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রদান ইউনিট চালু করাসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট আবেদন দায়ের করা হয়।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রিটে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে বিবাদী করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে তথ্য সেল প্রতিষ্ঠা ও অফিসার নিয়োগ দেওয়ার বিধান রয়েছে। এছাড়া সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অবাধ তথ্য প্রবাহ ব্যক্তির মৌলিক অধিকার। অথচ সুপ্রিম কোর্ট সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সেল বা অফিসার নেই। তথ্য সেল না থাকায় এই অধিকার খর্ব হচ্ছে।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়, রিট আবেদনকারী মৃত্যু দণ্ডাদেশ সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেন। প্রায় ছয় মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো তথ্য সরবরাহ করা হয়নি। পরে তথ্য অধিকার আইনের বিধান বাস্তবায়নের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর আইনি নোটিশ দেন। তাতেও কোনো জবাব না পেয়ে এ রিট আবেদন দায়ের করা হয়।
এর আগে গত ১৭ মে একই দাবিতে সংশ্লিষ্টদের আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন রিটকারী আইনজীবী। নোটিশ হাতে পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে তথ্য প্রদান ইউনিট চালু এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগের যথাযথ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়।
এর ব্যর্থতায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হবেন বলেও নোটিশে উল্লেখ করেন আইনজীবী শিশির মনির। পরে এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়।