বিচারপতিদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিশেষ করে তাদের অবসরকালীন বেশকিছু সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২২ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ (বাজেট) অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বিলটি উত্থাপনের পর বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
সামরিক শাসনামলে জারিকৃত অধ্যাদেশগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন সুপ্রিম কোর্ট জাজ (লিভ, পেনশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ সময়োপযোগী করে নতুন আইন আকারে বাংলা ভাষায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২২ করা হয়েছে।
সময়োপযোগী করার উদ্দেশ্যে আগের আইনের কিছু বিধান সংশোধন করা হয়েছে। আইনানুযায়ী, জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য ছিলেন না অর্থাৎ আইনজীবী থেকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হয়েছেন তাদের ভবিষ্য তহবিল সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এই আইন অনুযায়ী, “কোনো অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি তার জীবদ্দশায় গৃহ সহায়ক, গাড়ি চালক, নিরাপত্তা সেবা, সাচিবিক সহায়তা এবং অফিস কাম রেসিডেন্স রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা অবসরত্তোর বিশেষ ভাতা পাবেন।”
এছাড়া আইনের সংজ্ঞায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পেনশনযোগ্য কর্মকাল অর্থ হবে প্রকৃত কর্মকাল। পূর্ণ বেতনে প্রত্যেক ছুটির মেয়াদ হবে ৩০ দিন অথবা প্রকৃতপক্ষে গৃহীত ছুটির পরিমাণ উভয়ের মধ্যে যেটি কম, সেটি।
“কোন বিচারক পূর্ণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালে তার নির্ধারিত মাসিক বেতনের সমানহারে ছুটিকালিন বেতন প্রাপ্য হবেন। কোনো বিচারক অর্ধ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালীন যে সরকারি বিধান আছে, সে অনুযায়ী ছুটি প্রাপ্য হবেন।”
এছাড়া কোনো বিচারক দায়িত্ব পালনকালে আহত হয়ে অক্ষম হলে ‘বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি’ প্রাপ্য হবেন। কোনো বিচারক কোনো সহিংস ঘটনায় আহত বা নিহত হলে এ বিষয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের জন্য যে বিধান প্রযোজ্য, তা ওই বিচারকের ক্ষেত্রেও ‘প্রয়োজনীয় পরিবর্তনসহ’ প্রযোজ্য হবে।
আর কোনো বিচারক অবসর গ্রহণকালে ছুটি পাওনা সাপেক্ষে ১৮ মাসের ছুটি নগদায়নের সুবিধা পাবেন, যা সরকারি কর্মচারীরা পায়। এটা সুপ্রিম কোর্টের জাজদের বেলায় ছিল না। এই আইন পাশ হলে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের যদি ছুটি পাওনা থাকে, তাহলে উনারাও এই সুবিধা পাবেন।
এর আগে চলতি বছরের ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২২ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।