রাজধানীর জুরাইনে তিন পুলিশ সদস্যকে মারধরের ঘটনায় আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে গাইবান্ধা জেলা আইনজীবী সমিতি।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জেলা আইনজীবী সমিতির সহ সভাপতি মাহবুবুল আলম আকন্দ, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বাবু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার হোসেন (বাবুল), কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম ফয়ছাল হোসেন ও মো. ফারুকুল ইসলাম (ফারুক) স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ‘ঢাকা আইনজীবী সমিতির তিনজন বিজ্ঞ সদস্যকে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলায় গ্রেফতার, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন ও ২ জনকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদে গাইবান্ধা জেলা বারের নেতৃবৃন্দের নিন্দা ও প্রতিবাদ। অবিলম্বে বিজ্ঞ আইনজীবীগণের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবী জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৭ জুন) জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তার উল্টোদিক থেকে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্যকে মারধর করা হয়।
আহতরা হলেন- ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন, ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উৎপল দত্ত অপু।
জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে জুরাইন রেলগেট সড়কের উল্টোদিক দিয়ে স্বামী ইয়াসিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে আসছিলেন অ্যাডভোকেট নিশাত। এসময় সার্জেন্ট আলী হোসেন ও ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজ তাদের গতিরোধ করেন।
নিশাত নিজেকে অ্যাডভোকেট পরিচয় দিয়ে সার্জেন্ট আলী হোসেনের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে ইয়াসিন মোটরসাইকেল থেকে নেমে সার্জেন্ট আলী হোসেনকে ধাক্কা দেন। এসময় অ্যাডভোকেট নিশাত চিৎকার শুরু করলে পাঠাও ও অটোচালকরা সার্জেন্ট আলী হোসেনের ওপর হামলা করেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতেই শ্যামপুর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত সাড়ে ৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন।
পরদিন বুধবার এ মামলায় গ্রেফতার ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আসামি ইয়াসিন জাহান নিশান ভুঁইয়াকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। অন্য পাঁচ আসামির সাতদিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্যামপুর থানার পরিদর্শক খন্দকার জালাল উদ্দিন মাহমুদ।
শুনানি শেষে এ ঘটনায় দুই আইনজীবীসহ গ্রেফতার পাঁচজনের তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর অ্যাডভোকেট ইয়াসিন জাহান নিশান ভূঁইয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় আদালত তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে জামিন মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সোহাকুল ইসলাম রনি ও তার শ্যালক ইয়াসিন আরাফাত ডেইরী, স্থানীয় বাসিন্দা মো. শরীফ, মো. নাহিদ এবং মো. রাসেল।
সোহাকুল ইসলাম বার্তা বিচিত্রা ডটকম নামের একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের প্রকাশক। তাঁর স্ত্রী ইয়াছিন জাহান ওই সংবাদমাধ্যমের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। এদের মধ্যে সোহাকুল শিক্ষানবিশ আইনজীবী এবং ইয়াসিন জাহান ও তাঁর ভাই ইয়াসিন আরাফাত আইনজীবী।
পরে অবশ্য আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে রিমান্ডের আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিতের মৌখিক আদেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে রিমান্ডের বিষয়ে পুনরায় শুনানির জন্য রোববার (১২ জুন) দিন ধার্য করা হয়।