মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী: ৯ হাজার ৮৫০ পিচ ইয়াবা টেবলেট পাচারের মামলায় কক্সবাজারে একজন ইয়াবাকারবারীকে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে রায়ে আসামীকে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার (১৪ জুন) এ রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডিত আসামী কক্সবাজার জেলার টেকনাফের আলীখালী, বর্তমানে পূর্ব লেদার আলী আহমদ এর পুত্র মোহাম্মদ হোসেন (২৮)।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশ।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ
২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর বিজিবি’র টেকনাফের লেদা বিওপি’র একটি টিম মিয়ানমার থেকে হস্তচালিত নৌকা নিয়ে ইয়াবা টেবলেট আনার গোপন খবর পেয়ে সেখানে এক অভিযান চালায়। অভিযানে লেদা খালের দক্ষিণে কেওড়া বাগান থেকে মোহাম্মদ হোসেনকে আটক করে।
অভিযান চলাকালে টেকনাফের রঙ্গীখালী পূর্ব লেদার মৃত লাল মিয়ার পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীর এবং একই এলাকার মোঃ জসিম উদ্দিন পালিয়ে যায়। পরে হাতেনাতে ধৃত মোহাম্মদ হোসেনের কাছে থাকা ৯ হাজার ৮৫০ পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় বিজিবি’র হাবিলদার নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর ৯ (খ) ধারায় ঘটনাস্থল থেকে ধৃত ইয়াবাকারবারী মোহাম্মদ হোসেন, পলাতক আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর ও মোঃ জসিম উদ্দিনকে আসামী করে একটি মাদক মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর: ৩৮/২০১২, জিআর মামলা নম্বর: ৬৪৪/২০১২ এবং এসটি মামলা নম্বর : ৭২৭/২০১৩ ইংরেজি।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) টেকনাফ থানার এসআই মোঃ শাহ আলম মামলাটি তদন্ত করে ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীটে ঘটনাস্থল থেকে ধৃত ইয়াবাকারবারী মোহাম্মদ হোসেনের বিরুদ্ধে ইয়াবা টেবলেট পাচারের ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিচার করার এবং পলাতক আসামী মোঃ জাহাঙ্গীর ও মোঃ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাদের মামলার দায় হতে অব্যাহতি দিতে আদালতে আবেদন করা হয়। চার্জশীটটি ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই আদালতে গৃহীত হয়।
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, মামলাটি বিচারের জন্য ২০১৪ সালের ১৬ জুন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
বিচার ও রায়
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২০১৫ সালের ৯ জুন মামলাটির চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামী পক্ষে সাক্ষীদের জেরা, জব্দ করা আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন যাচাই ও পর্যালোচনা, যুক্তিতর্ক শেষে বিচারক রায় ঘোষণা করেন
রায়ে বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (১) এর ৯ (খ) ধারায় ইয়াবাকারবারী মোহাম্মদ হোসেনকে দোষী সাব্যস্থ করে ১০ বছর সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
এছাড়াও রায়ে ১৯(৪) ধারায় আসামীকে একইসাথে এক লক্ষ টাকা অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
দন্ডিত ইয়াবাকারবারী মোহাম্মদ হোসেন আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে।