ঢাকার জুরাইনে মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতিকে আটকানোর পর কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুই আইনজীবীর রিমান্ড বাতিলের প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
ইতোমধ্যে অধস্তন আদালতে আইনজীবীদের রিমান্ড বাতিল ও জামিন হওয়ায় হাইকোর্টের রুলের কার্যকারিতা না থাকায় আজ রোববার (১৯ জুন) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
ব্যারিস্টার অনিক আর হক আদালতে বলেন, বিচারিক আদালত দুই আইনজীবীর রিমান্ড বাতিল করেছেন এবং তাদের জামিন দিয়েছেন। তাই এ মামলা আমরা চালাতে চাচ্ছি না। পরে আদালত রুল খারিজ করে আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৪ জুন রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগের মামলায় শিক্ষানবিশ আইনজীবী সোহাকুল ইসলাম রনি ও তার শ্যালক আইনজীবী ইয়াসিন আরাফাতের রিমান্ড বাতিল করে জামিন দেন ঢাকা মহানগর আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন তাদের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
ওইদিন সকালে আপিল বিভাগ বলেছিলেন, জুরাইনের ঘটনায় পুলিশ যদি অপরাধ করে তার বিচার হবে, আইনজীবী অপরাধ করলে তারও বিচার হবে। যে যতটুকু অপরাধ করেছে তার বিচার হবে।
আদালত রিটের পক্ষের আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা বিচারিক আদালতে দুই আইনজীবীর জামিন আবেদন করুন। তারা জামিন না দিলে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করুন। হাইকোর্টে জামিন না দিলে তারপর আমরা দেখব।
গত ১২ জুন রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগের মামলায় দুই আইনজীবীকে রিমান্ডে নেওয়ার ঘটনায় মামলার নথি তলবের আদেশ স্থগিত করেন চেম্বার আদালত।
এর আগে ৮ জুন রাজধানীর জুরাইনে ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুই আইনজীবীসহ ৫ জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত এ রিমান্ড আদেশ দেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- শিক্ষানবিশ আইনজীবী সোহাবুল ইসলাম রনি ও তার শ্যালক আইনজীবী ইয়াসিন আরাফাত, স্থানীয় বাসিন্দা মো. শরীফ, মো. নাহিদ এবং মো. রাসেল।
এদিকে মামলার একমাত্র নারী আসামি আইনজীবী ইয়াসিন জাহান ভূঁইয়া নিশানের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। তবে আইনজীবীদের বিক্ষোভের মুখে রিমান্ড সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।
জানা গেছে, গত ৭ জুন সকালে স্ত্রীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে বের হন সোহাকুল। উল্টো পথে আসা এবং তাঁর স্ত্রীর মাথায় হেলমেট না থাকায় জুরাইন সিগন্যালে তাঁদের আটকান ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
দুই পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে ইয়াছিন জাহান পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করেন। এরপর স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে একজন ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় সোহাকুল ইসলাম, তাঁর স্ত্রী ইয়াছিন জাহানসহ তিনজনের নাম উল্লেখপূর্বক ৪শ জনকে আসামি করে শ্যামপুর থানায় মামলা করে পুলিশ। সেদিনই ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।