ভুক্তভোগীকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বললেন সুপ্রিম কোর্ট
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট। ছবি: জয়দীপ্তা দেব চৌধুরী

ট্রেনের ছাদে যাত্রী নেওয়া যাবে না : হাইকোর্ট

ট্রেনের ছাদে যাত্রী নেওয়া বন্ধ করতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি ও ছাদে যাত্রী নেওয়া বন্ধের বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ ঘোষণা দেন।

আদালত রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ট্রেনের ছাদে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধের নির্দেশ দেন। আদালত বলেছেন, ‘এরপর থেকে ট্রেনের ছাদে কোনো যাত্রী পরিবহণ করলে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে।’

শুনানিকালে রেলওয়ের তিন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘রেলে এত অব্যবস্থাপনা কেন থাকবে? কেন টিকিটে কালোবাজারি হবে? কেন মানুষ ট্রেনের ছাদে যাবে? আপনারা কি রেলকে গ্রাস করতে চাইছেন? এ অবস্থা চলতে পারে না।’

আদালত বলেন, ‘রেল আমাদের জাতীয় সম্পদ। সেই সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠে। ট্রেন থেকে পড়ে তো দুর্ঘটনাও হতে পারে। আর আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমান। এটা হতে পারে না। আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন।’

এদিকে রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্দোলনরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির অভিযোগ তদন্তে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কমিটি গঠন করেছে বলে হাইকোর্টকে অবহিত করা হয়েছে।

কমিটি গঠনের চিঠিতে বলা হয়, ‘মহিউদ্দিন রনি, শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রাপ্ত স্মারকলিপি এতদসঙ্গে প্রেরণ করা হলো। স্মারকলিপিতে বর্ণিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নে কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গঠিত কমিটির সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন ৭ (সাত) দিনের মধ্যে অত্র দপ্তরে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো’।

এর আগে বুধবার (২০ জুলাই) স্বপ্রণোদিত হয়ে মহিউদ্দিন রনির অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে খোঁজ নিতে বলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কমলাপুরে মহিউদ্দিন রনির অবস্থানের কারণ সম্পর্কে জানতে চান।

ওই সময় হাইকোর্ট বলেন, আমরা পত্রিকায় দেখলাম একটি ছেলে আন্দোলন করছে। ছেলেটি যে আবেদন করেছে সেটা নাকি সচিব গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আন্দোলনরত শিক্ষার্থী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।

এসময় আদালত দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিককে তার আন্দোলনের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলেন।

প্রসঙ্গত, গত ৭ জুলাই থেকে রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা-যাত্রী হয়রানির প্রতিবাদে ছয়দফা দাবিতে হাতে শিকল বাঁধা অবস্থায় কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। শুরুতে একা আন্দোলন করলেও পরে তার বন্ধু, সহপাঠীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও অবস্থান নেন। কদিন ধরে সেখানে তারা গান, কবিতা, পথনাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন।