লিগ্যাল এইড মানে শুধুমাত্র অসহায় ও গরীব মানুষদের জন্য সরকারী খরচে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া; এই ধারণার আমূল পরিবর্তন করে দিয়েছে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার লিগ্যাল এইড অফিস।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ছয় মাসের কাজের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে যে কেউ ইতিবাচকভাবে বিস্মিত হবেন। এই কাজে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার ও সিনিয়র সহকারী জজ মোঃ জুনাইদ এর আন্তরিক প্রচেষ্টা এখন রাঙ্গামাটিসহ দেশের আইন অঙ্গনে আলোচিত ও প্রশংসিত।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে মোঃ জুনাইদ রাঙ্গামাটির লিগ্যাল এইড অফিসার হিসাবে যোগদান করে বাংলাদেশে প্রথমবারের বারের মত পুরো জেলায় নালিশী জমিতে গিয়ে সরেজমিন মীমাংসা সভা ও হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগ শুনানির কার্যক্রম শুরু করলে তা ব্যাপক সাড়া পড়ে।
এছাড়া, রাঙ্গামাটিতে কোনো দাতা সংস্থা বা এনজিওর সহযোগিতা ছাড়াই সকল উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গ ও কারাগারে গণশুনানী করা শুরু করেন। যার ফলাফল ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হওয়া শুরু করেছে।
রাঙ্গামাটির লিগ্যাল এইড অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, গত ছয় মাসে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের মধ্যস্থতায় ৯৮টি বিরোধ মামলা করার পূ্র্বেই সফলভাবে মীমাংসা হয়েছে। যার মধ্যে দেওয়ানী ৩৩, ফৌজদারী ২৪, পারিবারিক ২২ এবং অন্যভাবে ১৯টি।
এছাড়া আদালতে বিচারাধীন চারটি পুরনো মামলা মীমাংসা হয়েছে। মামলা না করেই টাকা আদায় হয়েছে প্রায় আটাশ লাখ। সবমিলিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়েছে ২৭৮টি।
দেশের দূর্গমতম জেলা হওয়া স্বত্ত্বেও ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে স্বশরীরে গিয়ে ৫টি উপজেলা এবং ১৪টি ইউনিয়ন কমিটি গঠন ও কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া, জেলা কারাগারসহ সদর ও বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ৮টি গনশুনানী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পাশাপাশি লিগ্যাল এইড এর সাথে সম্পৃক্ত বিচারক, প্যানেল আইনজীবী ও আদালতের সহায়ক কর্মচারীদের নিয়ে সেমিনার ও প্রশিক্ষণ এর আয়োজন করা হয়েছে। গত ছয়মাসে লিগ্যাল এইড রাঙ্গামাটির সরাসরি সেবা পেয়েছেন প্রায় ৩ হাজার মানুষ।
যোগাযোগ করা হলে লিগ্যাল এইড অফিসার মোঃ জুনাইদ ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, লিগ্যাল এইড অফিসে জনবল সংকট রয়েছে। এই সংকট সমাধান হলে সেবা দ্বিগুণ করা সম্ভব। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।