দেশের জাতীয় প্রতীক দিয়ে কোনো শিল্প নকশা করা হলে মিলবে না মালিকানা স্বত্ত্ব – এমন বিধান রেখে বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২২ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে সোমবার (২৫ জুলাই) আইনের খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “খসড়া আইনটি কিছুদিন আগে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।”
খসড়া আইন অনুযায়ী জাতীয় প্রতীকে গড়া কোন শিল্প-নকশার মালিকানা স্বত্ত্ব দেওয়া হবে না জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “শাপলা দিয়ে কেউ একটা নকশা করে বললো এটা আমার প্রোপারটি রাইট (স্বত্ত্ব), এটা (স্বত্ত্ব) দেওয়া হবে না। কেউ বাঘ দিয়ে, কাঁঠাল দিয়ে নকশা করলো, সেটার (মালিকানা দেওয়া) হবে না। কারণ এগুলো আমাদের জাতীয় নকশা।”
তিনি বলেন, “কোন শিল্প-নকশার স্বত্ত্বাধিকারী তার নিবন্ধিত শিল্প-নকশা অন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহার করা থেকে নিবৃত্ত করার অধিকার পাবেন। আমি যদি সঠিকভাবে কোন নকশার স্বত্ত্ব নিই, তবে কেউ সেটা ব্যবহার করতে চাইলে অনুমতি নিতে হবে।”
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, “আইপিআর (মেধা সম্পত্তি অধিকার) কর্মসূচির আওতায় ডব্লিউআইপিও (ওয়ার্ল্ড ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি অরগানাইজেশন) কর্তৃক এলডিসিভুক্ত দেশগুলোর জন্য মেধাসম্পদ যাতে সংরক্ষণ করা যায় সেজন্য একটা ‘মডেল ল’ করা দরকার। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯১১ সালের যে প্যাটেন্ট অ্যান্ড ডিজাইন অ্যাক্ট ছিলো, যেটা অনেক পুরোনো, সেটাকে আধুনিক করে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “কতিপয় শিল্প-নকশা এই আইনের অধীনে সুরক্ষা পাবে। আবার কিছু কিছু পাবে না। যেমন প্রযুক্তিগত ও ব্যবহারিক দিক বিবেচনা করা হয়েছে। এই রকম কিছু ইনোভেশন যদি থাকে, যার বাণিজ্যিক ব্যবহার জনশৃঙ্খলা, পরিবেশ ও নৈতিকতার পরিপন্থি তাহলে সেটা সুরক্ষা পাবে না। সেটা দিয়ে কোন প্রটেকশন পাওয়া যাবে না। আমি এমন একটা জিনিস করলাম যেটা দিয়ে মানুষের কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণ হয়, আমি যদি দরখাস্ত দিই এটা আমার প্যাটেন্ট রাইট, এটা দেওয়া হবে না।
“অনিবন্ধিত কোন কিছুর নকশা থাকে, আমি এটার রেজিস্ট্রেশন করলাম না। শিল্প চালাচ্ছি, মুনাফা করছি। তখন অন্য কেউ যদি এটা করে, তখন সে দরখাস্ত দিতে পারবে না। তুমি তো রেজিস্ট্রেশনই করোনি।”
খসড়া আইন অনুযায়ী, কোন ব্যক্তি চাইলে তার শিল্প-নকশা বাতিল করার অধিকারও রাখেন বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।