মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী : কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থান করা রোহিঙ্গা শরনার্থীরা মাদক, হত্যা, গুম, ধর্ষণ, মানবপাচার, ডাকাতি, অপহরণ, অবৈধ অস্ত্রসহ নানাবিধ জঘন্য অপরাধকর্মে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য ক্যাম্পের আশেপাশের এলাকার স্থানীয় সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতি সঞ্চার ও আতংক বাড়ছে।
রোহিঙ্গা আসামীদের জামিন আবেদন বিষয়ক জারীকরা এক বিজ্ঞপ্তিতে কক্সবাজারের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল একথা উল্লেখ করেছেন। রোববার ২৪ জুলাই বিজ্ঞপ্তিটি প্রশাসনিক শাখার ৩০৭ নম্বর স্মারকে জারী করা হয়েছে বলে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস.এম আব্বাস উদ্দিন জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা অপরাধীদের মামলার ভারে আদালতের নিয়মিত কাজ ওভারলোডেড (Overloaded) হয়ে গেছে। এতে আদালতের স্বাভাবিক মামলা নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ক্যাম্পগুলোতে আইনশৃংখলা সুরক্ষায় ও অপরাধ দমনে হিমশিম খাচ্ছে।
এ অবস্থায় রোহিঙ্গা আসামীদের মামলার তদন্তের নির্ধারিত সময়ের পূর্বে আদালতে রোহিঙ্গা আসামীদের পক্ষে জামিন আবেদনের জন্য তদবির না করে, তদন্তকাজে সহযোগিতা করা সংশ্লিষ্ট সকলের নৈতিক দায়িত্ব বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারী মিস মামলা মূলে কোন রোহিঙ্গা আসামীর মাদক, হত্যা, গুম, ধর্ষণ, মানবপাচার, ডাকাতি, অপহরণ, অবৈধ অস্ত্রসহ অন্যান্য মামলায় জামিন বিষয়ক আদেশ প্রচার হওয়ার পর একই বিষয়ে, একই আসামীর ন্যূনতম পরবর্তী ৪ মাস পর্যন্ত পুনরায় জামিন আবেদন করা থেকে বিরত থাকা বাঞ্ছনীয়। যদি এর ব্যত্যয় হয়, আদালতে অতিরিক্ত মামলার চাপে বিজ্ঞ বিচারকের স্বাভাবিক বিচার কার্যক্রম নিষ্পত্তিতে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।
এ অবস্থায় আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক ও সাবলিলভাবে পরিচালনার স্বার্থে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তির কপি কক্সবাজারের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জারীকৃত বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে বলেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অপরাধকর্মে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা আশংকাজনকভাবে বাড়ছে। তাতে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে কক্সবাজারের বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এর জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি কার্যকর করতে পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ২৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে বর্তমানে ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বসবাস করছে।