মানি লন্ডারিং আইনে ২৭টি ধারা। এর মধ্যে মাত্র একটি ধারা ছিল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে। বাকি ২৬টির ক্ষমতা দেওয়া ছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগসহ (সিআইডি) ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে। যদিও ২০১৬ সালে আইনটি সংশোধনের আগ পর্যন্ত সব ধারার একচ্ছত্র ক্ষমতা ব্যবহার করে অর্থ পাচার অপরাধ তদন্ত ও আইনি ব্যবস্থায় সফলতা দেখিয়েছিল দুদক।
আইনটি সংশোধনের পর কমিশনের দেশে-বিদেশে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ তদন্তের পরিধি একেবারেই ছোট হয়ে আসে। তবে হারানো ক্ষমতা ফিরে পেল দুদক। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজেদের তফসিলভুক্ত মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত সব অভিযোগ তদন্ত করতে পারবে দুদক।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
মো. জহুরুল হক বলেন, দুদক এখন থেকে তফসিলভুক্ত মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ তদন্ত করতে পারবে। এখন আর আইনি বাধা নেই, সম্প্রতি উচ্চ আদালতের রায় আমরা হাতে পেয়েছি, তাতে বলা আছে, দুদক তাদের তফসিল অনুযায়ী সব পারবে।
তিনি আরও বলেন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ২৭টি অপরাধের কথা বলা হয়েছে। এতদিন এর মধ্যে মাত্র একটি অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত করতে পারত দুদক। ২০১৭ সালে এ বিষয়ে মামলা ও হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ আছে। সর্বশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আরেকটি মামলার পরিপ্রেক্ষিত হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছেন।
দুদক কমিশনার বলেন, আপনারা হয়ত বলবেন, মানিলন্ডারিং বিষয়ে পার্লামেন্টে আইন সংশোধন করা হয়েছে। হাইকোর্ট তার আদেশে সেটাও বলেছেন। আর সংবিধানের ১১১ ও ১১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উচ্চ আদালতের আদেশ আমাদের মানতেই হবে। আমরা মানতে বাধ্যও।
প্রসঙ্গত, আগে মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সংশ্লিষ্ট অপরাধ অনুসন্ধান করতে পারত দুদক। সিআইডি ছাড়া আরও যে পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে মানি লন্ডারিং আইনের বিভিন্ন ধারার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ কাস্টমস, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।