চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির চলমান বিরোধের বাস্তবিক বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আনার আশ্বাস দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। একইসঙ্গে জেলা প্রশাসকের সাথে আইনজীবী সমিতির সকল সমস্যা অচিরেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক আইনজীবীদের জন্য প্রদত্ত প্রণোদনা বিতরণ অনুষ্ঠানে গত বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আশ্বাস প্রদান করেন। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে আইনজীবী অডিটরিয়ামে প্রণোদনা কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান এ এম আমিন উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য এ. এস. এম. বদরুল আনোয়ার। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম. জিয়াউদ্দিন।
সমিতির সহসাধারণ সম্পাদক মো. এরশাদুর রহমান রিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি আবু মোহাম্মদ হাশেম। উপস্থিত ছিলেন কার্যনির্বাহী পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ শফিক উল্লাহ সহসভাপতি মোহাম্মদ আজিজ উদ্দীন (হায়দার), অর্থ সম্পাদক এম. সালাহ্উদ্দিন মনসুর চৌধুরী (রিমু), পাঠাগার সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক লায়লা নুর, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. মেজবাহ উদ্দিন (দোয়েল), নির্বাহী সদস্য যথাক্রমে মো. তৌহিদুল বারী চৌধুরী, এ.এন.এম. রোকনুজ্জামান (মুন্না), মো. খোরশেদ আলম, মো. মোস্তফা করিম, তৌহিদুল ইসলাম, মো. আবদুল্লাহ-আল-মামুন, বিলকিস আরা (মিতু), আইনুল কামাল, শ্যামল চৌধুরী, সেলিনা আক্তার এবং সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, আইনজীবীদের প্রণোদনা প্রদান করে বাংলাদেশের সকল আইনজীবীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভালোবাসা বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। প্রণোদনা দিয়ে তিনি আইনজীবীদের প্রতি তাঁর উদারতার পরিচয় দিয়েছেন। আমরা আইনজীবীরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নিকট চির কৃতজ্ঞ। উক্ত প্রণোদনার অর্থ সমিতির সম্পদ বৃদ্ধিতেও সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
বার কাউন্সিলের সদস্য এ.এস.এম. বদরুল আনোয়ার এবং সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ.এইচ.এম. জিয়াউদ্দিন এডিএম কোর্টে ১৪৫ ধারার মামলাসমূহ শুনানীর সময় আইনজীবীর প্রয়োজন নাই বিষয়টি অ্যাটর্নি জেনারেলের নজরে আনলে তিনি বিচারকদের সমালোচনা করে বলেন, কোন বিচারপ্রার্থী জনগণ যদি আইনজীবীর সহায়তা চায় তবে তিনি তাঁর অধিকার থেকে আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারবেন, সেক্ষেত্রে আইনজীবীর প্রয়োজন নেই মর্মে এডিএম কোর্টের বিচারক যে মন্তব্য করেছেন সেটি আইন সর্ম্পকে তাঁর অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। আইনজীবীদের পেশাগত সম্মান যাতে ক্ষুণ্ণ না হয় তিনি বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরে আনবেন।
চট্টগ্রামের ডিসি প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইনজীবী সমিতির সাথে প্রশাসনের যে বিরোধ সেটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে তিনি আলোচনা করবেন। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই। যে কোন সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা সম্ভব। আমি আশা করছি অচিরেই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সকল সমস্যার সমাধান হবে।
এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ১৯৮৮ সালে ২৪শে জানুয়ারী তৎকালীন স্বৈরশাসকের পুলিশ বাহিনীর গুলির মুখে চট্টগ্রামের আইনজীবীরা নিজেদের মানবঢাল বানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জীবনরক্ষায় এগিয়ে এসেছিল তিনি সব সময় মনে রেখেছেন। সেই আইনজীবীদের প্রণোদনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনজীবীদের প্রদি যে উদারতা দেখিয়েছেন এই জন্য চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সকল বিজ্ঞ সদস্যগণ তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বক্তব্য শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল সমিতির সদস্যদের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত প্রণোদনার অর্থ বিতরণ করেন। পরবর্তীতে তিনি সমিতির লাইব্রেরী পরিদর্শন করে লাইব্রেরীর বার কোড কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করেন।