অবিবাহিতাদের গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়ার পক্ষে ওকালতি করল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। বিদ্যমান মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি ল অনুযায়ী, ২০ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে আর গর্ভপাতের অনুমতি পাবেন না অবিবাহিতারা। এই আইনে একজন নারীর ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলেই মত দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং জেবি পারদিওয়ালা জানিয়েছেন, এই আইন পর্যালোচনা করতে হবে, যেন অবিবাহিতারা ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাতের অনুমতি পান। সাম্প্রতিককালে চিকিৎসাশাস্ত্রে অনেক উন্নতি হয়েছে। ফলে গর্ভপাত করতে ঝুঁকি অনেকটাই কমেছে।
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, ‘চিকিৎসকেরা যদি অনুমতি দেন, তাহলে অবিবাহিতা নারীরা কেন ২৪ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করাতে পারবেন না?’
সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, গর্ভপাত করতে যদি ঝুঁকি থাকে, তাহলে সেটা বিবাহিত এবং অবিবাহিত উভয়েরই হতে পারে। তাই বিচারব্যবস্থায় প্রগতিশীল মানসিকতার পরিচয় দিয়ে আইন পালটানো দরকার।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি চন্দ্রচূড় গত ২১ জুলাই এক অবিবাহিতা তরুণীকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছিলেন। সম্প্রতি ২৫ বছরের এক তরুণী শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তার গর্ভে থাকা সন্তানের বয়স ২৪ সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আদালতের কাছে আরজি জানিয়ে ওই তরুণী বলেন, তিনি স্বেচ্ছায় অন্তঃসত্ত্বা হলেও পরে তার সঙ্গী তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
তার দাবি, এই অবস্থায় ‘কুমারী মা’ হয়ে ওই সন্তানকে যদি তিনি জন্ম দেন, তাহলে তাকে মানসিক যন্ত্রণার পাশাপাশি সামাজিক কলঙ্কের ভারও বইতে হবে। তাছাড়া এই পরিস্থিতিতে মা হতে তিনি একেবারেই প্রস্তুত নন বলেও ওই তরুণী জানিয়েছিলেন।
শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘ভারতের সংসদ কখনোই চায় না, একজন নারী অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার মধ্য দিয়ে যান। সেই কথা মাথায় রেখেই আমরা রায় ঘোষণা করছি। আবেদনকারী একজন অবিবাহিতা বলেই তাকে গর্ভপাতের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। একজন নারী বিবাহিত হোন বা অবিবাহিত, তার উপরে ভিত্তি করে সংসদীয় আইনের কোনও বদল ঘটানো হয় না’।
সেই সঙ্গে আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, ২০২১ সালে গর্ভপাত আইন সংশোধন করে ‘স্বামী’র বদলে ‘সঙ্গী’ লেখা হয়েছে। অর্থাৎ অবিবাহিত নারীদের গর্ভপাতের সুবিধা দেওয়ার জন্যই আইন বদলানো হয়েছে।