আদালত প্রাঙ্গণে দুই সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ’র সঞ্চালনায় সমাবেশে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে সাংবাদিক নির্যাতনকারী আইনজীবীদের গ্রেফতার ও বার কাউন্সিল সনদ বাতিলের জন্য ৩ দিনের আল্টিমেটাম দেন সাংবাদিক নেতারা। অন্যথায় সারাদেশের সাংবাদিকদের নিয়ে ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
প্রসঙ্গত, সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে ‘আইনজীবীদের মারধরের’ শিকার হন যমুনা টেলিভিশনের দুই সংবাদকর্মী। বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের ভেন্ডর সমিতির কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এতে আহত হন বেসরকারি যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার আল আমিন সিকদার এবং ক্যামেরাপারসন আসাদুজ্জামান লিমন। খবর পেয়ে তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান অন্য সাংবাদিকরা।
এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যায় ও রাতে পৃথক দুটি জরুরি সভা করেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) ও টিভি ইউনিটের নেতারা। জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তাঁরা।
হামলার শিকার দুই সংবাদকর্মী জানান, সংবাদ সংগ্রহের জন্য বিকেলে তাঁরা আদালত চত্বরে যান। এ সময় তাঁদের ওপর হামলা চালান কয়েকজন আইনজীবী। এর প্রতিবাদ জানালে তাঁদের আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে নিয়ে লাথি ও কিল-ঘুসি মারতে থাকেন ১০ থেকে ১৫ জন। খবর পেয়ে অন্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে আমি জেনেছি আদালত চত্বর দিয়ে ওঠার সময় যমুনা টিভির একটি গাড়ি থেকে বেশ কয়েকবার হর্ন বাজানো হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েকজন আইনজীবী প্রতিবাদ করেন। একপর্যায়ে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সাংবাদিকদের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে কয়েকজন আইনজীবী মারধরও করেন।
এ বিষয়টিকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে সমিতির সম্পাদক বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে এরই মধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটি যার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ পাবে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে হামলার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। হামলায় আহত সাংবাদিক আল আমিন সিকদার বাদী হয়ে বুধবার (১৭ আগস্ট) দিবাগত মধ্যরাতে কোতয়ালি থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় দুজনের নাম উল্লেখসহ ১০-১২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। নাম উল্লেখ করা দুজন হলেন– সাহেদুল হক (৩৫) ও ইসহাক আহমেদ (৩০)।