সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার অভাবেই দেশের আদালতগুলোতে বড় আকারের মামলাজট তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। এসময় তিনি বলেছেন, কারণ সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার অভাবে দেশের অধিকাংশ দেওয়ানি মামলার সৃষ্টি হয়। আবার ফৌজদারি মামলার অন্যতম কারণও ভূমি বিরোধ।
আজ শনিবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের ৪৫ ও ৪৬তম বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণকারী বিচারকদের জন্য আয়োজিত ‘ভূমি জরিপ সংক্রান্ত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ হওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাথাপিছু জমির পরিমাণ এবং আবাদযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে। তাই আগামী প্রজন্মের জন্য খাদ্যের নিশ্চয়তা ও আবাসনসহ উন্নত জীবনযাত্রার জন্য আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। আধুনিক ভূমি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অনুধাবন করেই সরকার ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এরইমধ্যে কিছু কিছু জেলায় ই-রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে ভূমি অফিসের ই-মিউটেশনের আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন এবং মিউটেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে এর সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় তাৎপর্যপূর্ণ উন্নয়ন হবে বলে তিনি মনে করেন।
আনিসুল হক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানেই সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন এবং সমাজে সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিতের যে অঙ্গীকার করেছিলেন বিচার বিভাগের উন্নয়নের মাধ্যমে তারই বাস্তবায়ন করে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। দ্রুততম সময়ে, কম খরচে ও কম ভোগান্তিতে জনগণের দোরগোড়ায় ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রমকে সফল করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নান্দনিক চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মাণ, বিচারক ও আইনজীবীদের একাডেমিক প্রশিক্ষণ এবং গবেষণার লক্ষ্যে ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম গ্রহণ, আইটি বেজড ডিজিটাল বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন পর্যায়ে বিচারিক পদসৃজন এবং অসহায় মানুষের জন্য কার্যকর আইন সহায়তা কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে সহজে জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
এছাড়াও বিদ্যমান আইনগুলো পর্যালোচনা করে কিছু আইন এরইমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে এবং দেওয়ানি কার্যবিধিসহ আরও কিছু আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একটি ফলপ্রসূ ও জনবান্ধব বিচার ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যেই সরকার এসব পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য রাখেন।