রংপুরের পীরগাছায় প্রেমের সম্পর্ক করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীর সন্তান জন্মদানের ঘটনায় উভয় পরিবারের অভিভাবকদের যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট। এক্ষেত্রে যশোর শিশু সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে সার্বিক সহযোগিতা করতে বলেছেন আদালত।
ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় কিশোর আসামির জামিন শুনানিকালে আজ রোববার (২৮ আগস্ট) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
এর আগে রংপুরের পীরগাছায় প্রেমের সম্পর্ক করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীর সন্তান জন্মদান ও সন্তান জন্মের পরও তাদের বিয়ে না হওয়ার ঘটনায় অভিভাবকদের তলব করেন হাইকোর্ট। গত ১০ আগস্ট কিশোর আসামির জামিন শুনানির সময় বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আজ শুনানির পর অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার বলেন, ওই তলব আদেশের প্রেক্ষিতে উভয় পরিবারের অভিভাবকরা আজ আদালতে হাজির হয়েছেন। উভয় পরিবার বিয়ের ব্যাপারে রাজি আছেন বলে আদালতকে জানান।
উভয় পরিবারের সম্মতি থাকায় এবং সন্তান জন্মলাভ করেছে এই বিবেচনায় আদালত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৯ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বলেও জানান তিনি।
আইনজীবী সেলিনা আক্তার বলেন, এ কারণে দুই পরিবার বিয়ে করানোর উদ্দেশ্যে যশোর শিশু সংশোধনাগারে গেলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করতে বলেছেন। বিয়ের পর আদালতকে প্রতিবেদন আকারে জানাতে বলা হয়েছে। এরপর আদালত কিশোর মুক্তির বিষয় বিবেচনা করবেন।
প্রসঙ্গত, মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী মো. লাল মিয়ার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোর ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেন হাবিবুর রহমান। ছেলেপক্ষ কিশোরীর বাবার সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগ করেছে। কিশোরীকে বিয়ে করে সন্তানের দায়িত্ব নিতে তার পরিবার রাজি। কিন্তু স্থানীয় গ্রাম্য প্রধান, চেয়ারম্যান-মেম্বারের প্ররোচনায় কিশোরীর বাবা টাকা ও তিন বিঘা জমি দাবি করে। যার কারণে বিষয়টি সমাধান হয়নি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, তার কিশোরী মেয়ে স্থানীয় দাখিল মাদরাসায় ক্লাস নাইনে পড়ে। দেড় বছর আগে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে লাল মিয়ার ছেলে প্রেমের সম্পর্ক করে। এমনকি ২০২১ সালের ১ অক্টোবর মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে। তারপর একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। যার ফলশ্রুতিতে মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়।
গত ২৫ মে পরীক্ষা করে কিশোরীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। পরে ১ জুন পীরগাছা থানায় কিশোরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করা হয়। মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় ওই কিশোরকে। আসামি বর্তমানে যশোর শিশু সংশোধনাগারে আছে।
এদিকে, গত ঈদুল আযহার দুইদিন পর কিশোরী সন্তান প্রসব করে। বিয়ে না হওয়ায় সন্তান বাবার স্বীকৃতি পায়নি।