যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে সুইস ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য আদালতে দাখিল করার ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করায় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে সতর্ক করে ক্ষমা করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতের তলবে এদিন সকালে হাইকোর্টে হাজির হন প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। দুপুর পৌনে ১টার দিকে শুনানি শুরু হয়। শুনানির সময় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, অসাবধনাবশত এই ভুল হয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এমন চিঠিপত্রের বিষয়ে আরও বেশি সচেতন এবং সতর্ক থাকবেন বলে জানান তিনি। পরে আদালত তাকে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের কার কত অর্থ আছে, নাম-পরিচয় ছাড়াই সে বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বিএফআইইউ প্রধানকে তলব করেন হাইকোর্ট।
শুনানির সময় আদালত বলেন, ‘সাদা কাগজে লিখে দিয়ে দিলেন। নাম-ঠিকানা-পদবি নেই। গোঁজামিল হয়ে গেল না? বিষয়টি কি এমন যে ধরি মাছ না ছুঁই পানি। যা হওয়ার হোক, যেন তাঁর নাম (আদালতে দাখিল করতে যে কর্মকর্তা কাগজ দিয়েছেন) না আসে। এত ভয় কিসের? যে কথা লিখেছেন, তার নিচে সই দিলেও হতো। নাম লিখলেন না, সই দিলেন না, যা খুবই উদাসীনতা। এটি কি কেউ গ্রহণ করবে? এই তথ্যাদির ওপর নির্ভর করা যায় না। এমন কাগজ দাখিল করা দুঃখজনক।’
প্রসঙ্গত, গত ১০ অগাস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়া বলেন, সুইস ব্যাংকে অর্থ জমা করা বাংলাদেশিদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য সরকার তাদের কাছে চায়নি।
তিনি বলেন, “এসব বিষয়ে (তথ্য পাওয়ার বিষয়ে) কীভাবে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যায়, সে বিষয়ে সরকারকে সব ধরনের তথ্য আমরা দিয়েছি। কিন্তু আলাদাভাবে অর্থ জমা করার বিষয়ে কোনো অনুরোধ আসেনি।”
ওই খবর নজরে এলে ১১ অগাস্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সরকার ও দুদকের ব্যাখ্যা চেয়েছিল আদালত।
সে ব্যাখ্যায় গত ১৪ অগাস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিএফআইইউ’র একটি প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন। একই সাথে দুদকের আইনজীবীও আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের বক্তব্য শুনে ওই দিন আদালত বলে, রাষ্ট্রদূত যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বক্তব্যের সাথে ‘সাংঘর্ষিক’।
এরপর আদালত ওই প্রতিবেদন এবং বক্তব্য ‘হলফনামা’ আকারে দাখিলের নির্দেশ দিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু ওই প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায়’ মঙ্গলবার শুনানির সময় বিএফআইউউ প্রধানকে তলব করা হয়।