জাল-জালিয়াতি এবং সরকারি অর্থ আত্মসাতের মামলায় ১৩ বছরের সাজা পেয়েছিলেন এক আসামি। তবে ওই আসামি গ্রেপ্তার এড়াতে ছদ্মবেশে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতেন। ৩৪ বছর পর গত বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্তেম্বর) রাজধানীর কাফরুল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব-৪-এর মানিকগঞ্জ ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্রবার (৩০ সেপ্তেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তার মো. মাজহারুল আলম (৭০) নামের ওই আসামির বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার বেতিলা-মিতরা ইউনিয়নের নালড়া গ্রামে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাজহারুল আলম ১৯৮১ সালে শিক্ষাগত সনদ জাল করে হরিরামপুর উপজেলা মুনসেফি আদালতে নাজির হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। সেখানে কর্মরত থাকতে আদালতের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে তিনি টাকার বিনিময়ে বিভিন্নজনকে গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন কাগজপত্র দিতেন। এর মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নিতেন। এ ছাড়া নাজিরের দায়িত্বে থাকতে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেন।
র্যাব জানায়, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও সনদ জালিয়াতির ঘটনা জানার পর আদালতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ১৯৮৭ সালে দুর্নীতি দমন আইনে মাজহারুলের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। চার মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
পরবর্তী সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ১৯৮৮ সালের ১ ডিসেম্বর আদালত আসামি মাজহারুলকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৩ বছরের কারাদণ্ড ও ৪ হাজার টাকা জরিমানা করেন। রায় ঘোষণার সময় মাজহারুল পলাতক ছিলেন।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরিফ হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার এড়াতে আসামি আত্মগোপন ছিলেন। পরিচিত লোকজন থেকে নিজেকে আড়াল করতে ঘটনার পরপরই তিনি ঢাকায় চলে যান। প্রথম দিকে তিনি ঢাকার মুদিদোকান ও পরে ওষুধের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
পরবর্তী সময় তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছোটখাটো ঠিকাদারির কাজ করতেন। ৩৪ বছর পর ঢাকার কাফরুল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামিকে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রউফ সরকার বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি মাজহারুলকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।