পঞ্চগড় আদালতে বিচার প্রক্রিয়ায় দাপ্তরিক কাজ করতে হাজতখানা ও আসামি কাঠগড়ায় আসামিদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এই সময়টুকু হতাশা, দুঃশ্চিন্তা আর দুর্ভোগে কাটে তাদের। দুর্ভোগ কমানোর পাশাপাশি তাদের বই পড়ে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিলেন বিচারক।
ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নিয়েছেন পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মতিউর রহমান। বুধবার তিনি আদালতের হাজতখানা ও তার আদালতের আসামি কাঠগড়ার পাশে দুটি মিনি পাঠাগার স্থাপন করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সকাল আটটা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রায় আট-নয় ঘন্টা আদালতের হাজতখানায় আসামিদের বসে থাকতে হয়। আসামিদের সাথে বেশ কয়েকদিন বিচারক নিজেই কথা বলেছেন। কথোপকথনে তিনি বুঝতে পারেন একাকিত্ব আর দুশ্চিন্তায় সময় কাটে তাদের।
এই নিঃসঙ্গতা আর একাকিত্বের সঙ্গী হতে পারে একমাত্র বই। এই ভাবনায় আদালতের হাজতখানাটি রং, চুন আর পরিপাটি করে কয়েদিদের জন্য বই পড়ার ব্যবস্থা করেন তিনি। ছোট্ট একটি বুক সেলফে সাজিয়ে রেখেছেন কিছু বই। নাম দিয়েছেন “আদালত পাঠাগার”।
সেখানে বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের বই, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত বইসহ আইনবিষয়ক বই রাখা হয়েছে। ছোট্ট এই পাঠাগারের নামের সাথে লেখা রয়েছে ‘বই দুঃশ্চিন্তাময় একাকিত্ব জীবনের একমাত্র বন্ধু, যা মানুষকে আলোকিত জীবনে ফিরিয়ে দেয়’।
এতে আসামিরা হাজতে বা কাঠগড়ায় (বিচার কাজ শুরুর আগে কাঠগড়ায়) বসে বই পড়ে সময় কাটানোর সুযোগ পাবেন।
এর আগেও বিচারক মতিউর রহমান শীতে আসামিদের কষ্ট লাঘবের জন্য কাঠগড়ায় কার্পেটের ব্যবস্থা করে দেন। আদালতে বিচার কাজের জন্য নারীদের সাথে আসা শিশুদের তিনি চকলেট প্রদানের ব্যবস্থাও রেখেছেন।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আশরাফুল ইসলাম বলেন, আদালতে বিচার কাজসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজের জন্য আসামিদের বিকাল পর্যন্ত হাজতখানায় থাকতে হয়। তাই বিজ্ঞ বিচারক তাদের সময় কাটানোর জন্য ছোট পরিসরে আদালত পাঠাগার স্থাপন করেছেন।