হলফনামার নামে সেবাগ্রহীতাদের হয়রানির অভিযোগে আদালতের তলবে স্বশরীরে হাজির হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন কুড়িগ্রাম জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক কবির হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) সকালে কুড়িগ্রাম চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (তৃতীয় আদালত) বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মজনু মিয়ায় আদালতে হাজির হয়ে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) লিয়াকত আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, উপ-সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বৃহস্পতিবার সকালে কাঠগড়ায় দাঁড়ালে আদালত তার কর্মকাণ্ডে উষ্মা প্রকাশ করেন। সেবাগ্রহীতাদের হয়রানি না করার জন্য নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকার জন্য তাকে বার বার সতর্ক করেন আদালত।
পরিপত্রের বাইরে গিয়ে অহেতুক কাউকে হয়রানি করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেন, ‘আগামী একমাস পুরো বিষয়টি আদালত মনিটরিংয়ে রাখবে। তারপরও পাসপোর্ট অফিসে কোনও সেবাপ্রার্থী হয়রানির শিকার হয়ে অভিযোগ করলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাসপোর্ট অফিসে যেন কোনও দালাল থাকতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপস্থিত উপ-সহকারী পরিচালক কবির হোসেনকে নির্দেশ দেন আদালত। এরপর আদালত কবির হোসেনের লিখিত ব্যাখ্যা গ্রহণ করে তার ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) একই আদালত উপ-সহকারী পরিচালক কবির হোসেনকে শোকজ করে স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার আদেশ প্রদান করেন।
আদেশে আদালত বলেন, ‘পাসপোর্ট অধিদফতর কর্তৃক প্রকাশিত পরিপত্র মোতাবেক জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে পাসপোর্ট সংশোধন করতে হলফনামার প্রয়োজন নেই জানালেও উপ-সহকারী পরিচালক কবির সেবাগ্রহীতাদের হয়রানির উদ্দেশ্যে হলফনামা করার জন্য আদালতে পাঠান। এতে সেবাপ্রার্থী জনগণ হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে আদালতের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। এ ছাড়াও অহেতুক হলফনামা সম্পাদন করতে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে অপ্রয়োজনীয় সময় অতিবাহিত করতে হচ্ছে এবং এতে করে আদালতের বিচারিক কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।’
এ অবস্থায় অভিযুক্ত উপ-সহকারী পরিচালক কবির হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হবে না, তা বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেন আদালত।