মামলায় খালাসের কথা বলে দুই ম্যাজিস্ট্রেটের নাম ভাঙিয়ে আসামির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক আইনজীবীকে পুলিশে দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
এ সংক্রান্ত এক অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে আইনজীবী জুয়েল মুন্সি সুমনকে বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে আটক করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কোতয়ালী থানায় পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে রাজধানীর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বুধবার আদালত থেকে জুয়েল মুন্সি নামে এক আইনজীবীকে প্রতারণার অভিযোগে মামলা দিয়ে থানায় পাঠানো হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) তাকে আদালতে পাঠানো হবে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মো. আবিরুল ইসলাম চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে তার স্ত্রী যৌতুকের মামলা করেন। মামলার পরে গত ২৮ আগস্ট আসামি আবিরুল ইসলামকে আইনজীবী পরিচয় ফোন দেন জুয়েল মুন্সি। ফোনে তিনি বলেন, আপনিসহ (আসামি) পরিবারের আরও তিনজনের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করা হয়েছে। সে মামলায় তিনজনকে বাদ দেওয়া যাবে, এজন্য জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।
সে কথা অনুযায়ী বনানীর একটি হোটেলে আবিরুল ইসলামের কাছে থেকে নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন আইনজীবী জুয়েল মুন্সি ও মামলা থেকে বাদ দেওয়া ম্যাজিস্ট্রেটের কাগজ সরবরাহ করেন। পরে ৩০ আগস্ট মামলার দরখাস্তের খরচ বাবদ আসামির কাছ থেকে আরও ১৫ হাজার টাকা নেন জুয়েল মুন্সি।
এরপর গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের আদালত থেকে জামিন করানো ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) ম্যানেজ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে মামলাটি স্থায়ী জামিন করানোর কথা বলে আরও তিন লাখ টাকা নেন ওই আইনজীবী। এছাড়া মামলা নিষ্পত্তির পরে আরও এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান।
বুধবার মামলাটি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জ শুনানির দিন ছিল। এদিন শুনানির জন্য ২০ হাজার টাকা আসামির কাছ থেকে নেন আইনজীবী। এভাবে জুয়েল মুন্সি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম ও শফি উদ্দিনকে টাকা দিতে হবে বলে মোট চার লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় আবিরুল ইসলাম সিএমএম আদালতে অভিযোগ করলে আদালত জুয়েল মুন্সির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে থানায় পাঠান।