দুর্নীতির মামলায় ১৩ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার আপিল মঞ্জুর করে তাকে খালাস দিয়ে ঘোষণা করা হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
রায় ঘোষণার চার বছর পর গতকাল শনিবার (১৫ অক্টোবর) তা প্রকাশ করলেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ ঘোষিত রায়ের ৯৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
এই বিষয়ে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘আমরা এখনো নথি পাইনি। তবে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রায় দেখেছি। এখন বিষয়টি কমিশনকে জানানো হবে। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে কি না সেটা কমিশনের বিষয়।’
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালের ১৩ জুন সেনাশাসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক নূরুল আলম সূত্রাপুর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। এতে সম্পদের তথ্য গোপন ও অবৈধভাবে ২৯ লাখ টাকার সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
২০০৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশেষ জজ আদালত মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে জরিমানাও করেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন মায়া। আপিলের পর ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগের এ নেতার ১৩ বছরের কারাদণ্ড বাতিল করেছিলেন হাইকোর্ট।
এর বিরুদ্ধে দুদকের আবেদনের পর ২০১৫ সালের ১৪ জুন মায়াকে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায় বাতিল করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ। একইসঙ্গে হাইকোর্টে নতুন করে আপিল শুনানির নির্দেশও দেওয়া হয়।
সে অনুসারে হাইকোর্ট বিভাগে পুনঃশুনানি হয়। পুনঃশুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর আবারও খালাস দেন হাইকোর্ট।
আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার, ড. বশির আহমেদ ও সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রোনা নাহরীন ও এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
রায়ের পরে সাঈদ আহমেদ রাজা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, আদালত তার আপিল মঞ্জুর করেছেন। ফলে তিনি খালাস পেয়েছেন।
সেদিন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আদালত ত্রাণমন্ত্রীর আপিল মঞ্জুর করেছেন, ফলে তিনি ১৩ বছরের দণ্ড থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন।