সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় ফৌজদারি মামলার আসামি হয়ে আইনত পলাতক হওয়ায় কুড়িগ্রামের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীন ও একই জেলার সাবেক সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমার পোস্টিংয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা রিট মামলায় তাদের ওকালতনামা ফেরত দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সুলতানা পারভীন, সাবেক আরডিসি নাজিম উদ্দিন ও সাবেক সহকারী কমিশনার রিন্টু বিকাশ চাকমার পোস্টিংয়ের প্রজ্ঞাপন স্থগিতের বিষয়ে করা আবেদন নথিভুক্ত করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলু। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন।
পরে আইনজীবী আজিজুর রহমান দুলু জানান, আমরা আদালতকে বলেছি তারা চারজন ফৌজদারি মামলার আসামি। আদালত থেকে তারা জামিন না নেওয়ায় আইনগতভাবে তারা পলাতক বলে বিবেচিত। তাই সুলতানা পারভীন ও রিন্টু বিকাশ চাকমার ওকালতনামা আদালত ফেরত দিয়েছেন। আমরা দেখেছি ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব আসামিদের পোস্টিংয়ের বিষয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুলের লিখিত অনুলিপি রিসিভ করেছেন। এরপরও তাদেরকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে, যা আদালত অবমাননার শামিল। এ বিষয়ে শুনানি হবে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আদালত অবমাননার আবেদন জানাবো।
প্রসঙ্গত, কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনের নামে জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাড়ি থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা। এরপর তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেলা প্রশাসনে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন করা হয়। পরে তার কাছে আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়ার অভিযোগ এনে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে মধ্যরাতেই জেলা হাজতে পাঠানো হয়। এ ঘটনা গণমাধ্যমগুলো তুলে ধরলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
-বাংলা ট্রিবিউন সংবাদ