মোহাম্মদ জুনাইদ : বাংলাদেশে সিভিল কোর্ট গুলোতে বাটোয়ারা ব্যতীত অন্য মামলাগুলো সাধারণত সর্বোচ্চ ৫-৭ বছরের মধ্যে বিচার শেষ হয়। কিছু জেলায় আরো কম সময়ে হয়। কিন্তু এজমালি সম্পত্তি ভাগের মামলাগুলোতে দেখা যায় দখলে থাকা পক্ষ অপর পক্ষকে বঞ্চিত করার উদ্দ্যেশ্য ক্রমাগত মিথ্যা, ভিত্তিহীন তথ্য দাবী করে মামলাকে জটিল থেকে জটিলতর করে। একের পর মুলতবির পিটিশন দেয়। এছাড়া, দেখা যায় সম্পতি পাবে ১০ শতক, দখলে আছে ১০ শতক অথচ মামলা করে বসে আছে ১০০ শতক এর জন্য।
যেহেতু একজন পেশাদার বিচারক সবাইকে নোটিশ জারি করে নালিশী জমিতে যাবেন, সেহেতু এটা সবাই জানবে বা জেনে যাবে। এর একটি কার্যকর সমাধান হতে পারে বিচারের পূর্বেই একজন পেশাদার ও অভিজ্ঞ বিচারক কর্তৃক নালিশী জমি সরেজমিনে পরিদর্শন। এর মাধ্যমে ভুয়া সমন জারি করে একতরফা ডিক্রি নেওয়াও চিরতরে বন্ধ করা সম্ভব।
তা এভাবে হতে পারে –
১. সব ধরনের বাটোয়ারা মামলা করার পূর্বে চেকের মামলার মত অপর পক্ষকে নোটিশ দিতে হবে।
২. নোটিশে কাজ না হলে পরের ৩০ দিনের মধ্যে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে সম্পত্তি বাটোয়ারার আবেদন করবেন।
৩. জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার (সিনিয়র সহকারী জজ) উপরোক্ত উপায়ে আবেদন পেয়ে পক্ষগণকে নোটিশ করে একজন সার্ভেয়ার/কমিশনারসহ সরেজমিনে নালিশী জমি পরিদর্শন পূর্বক নালিশী জমিতে মীমাংসা সভা করবেন।
৪. উপরোক্তরূপে মীমাংসা সভার পর একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে পক্ষগণকে অবগত করে আপত্তি থাকলে তা শুনবেন।
৫. আপত্তি থাকলে তা আইনানুগভাবে নিষ্পত্তি করবেন, আর না থাকলে পক্ষগণ আপোষে সম্পত্তি ভাগ করে নিবেন।
জেলা লিগ্যাল এইড অফিসারের প্রস্তাবিত আপোষ চুক্তি অগ্রাহ্য করে কেউ মামলা করে পরবর্তীতে কোর্টে গিয়ে হেরে গেলে হেরে যাওয়া পক্ষ অপরপক্ষকে মামলার সব খরচসহ কমপক্ষে এক লাখ টাকা জরিমানা দিবেন। এছাড়া, একই কোর্টকে উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির জন্য ফৌজদারী বিচার করে শাস্তি দেওয়ার জন্য ও এখতিয়ার দেওয়া যেতে পারে।
লেখক: জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।