অ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র দাস, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও নিয়মিত প্র্যাকটিশনার। ১৯৮৩ সালের ১ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্ম তাঁর।
সুরেশ চন্দ্র দাস ও পারুল রানীদাস দম্পতির সন্তান সুভাষ চন্দ্র দাস ১৯৯৯ সালে তমিজ উদ্দিন হাইস্কুল থেকে স্টার মার্কসহ প্রথম বিভাগে এসএসসি পাস করেন। এরপর এ. এম. কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন।
পরবর্তীতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করে ২০১২ সালে বার কাউন্সিল সনদ লাভ করেন। ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে প্র্যাকটিসের অনুমতি পান এবং তখন থেকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আইন পেশায় নিযুক্ত আছেন।
আসন্ন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ২০২৩-২০২৪ বর্ষের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ মনোনীত প্যানেলে কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী তিনি। সম্প্রতি তাঁর মুখোমুখি হয়েছিল ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম –এর বার্তা সম্পাদক কাজী ফয়েজুর রহমান (রিয়াজ)। একান্ত সাক্ষাৎকারে এই আইনজীবী জানিয়েছেন নির্বাচিত হলে আইনজীবী ও সমিতির কল্যাণে তাঁর বিশেষ পরিকল্পনার কথা।
ল’ইয়ার্স ক্লাব : আসন্ন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে আপনি প্রার্থী হয়েছেন, বার নির্বাচনের সিদ্ধান্ত কেন? এক্ষেত্রে কোন অনুপ্রেরণা কাজ করেছে কিনা?
সুভাষ চন্দ্র দাস : সমিতি হচ্ছে বিজ্ঞ আইনজীবীদের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার অন্যতম প্রধান স্থল। সমিতি ও আইনজীবীদের কল্যাণে বিজ্ঞ সিনিয়রদের ভূমিকা দেখেই মূলত বার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। যাতে করে এই পেশায় নিয়োজিত সহকর্মীদের সেবা করার সুযোগ হয়। এক্ষেত্রে অবশ্য আমার বিজ্ঞ সিনিয়র আইনজীবী ও সহকর্মীরা উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন।
ল’ইয়ার্স ক্লাব : নির্বাচনে বিজয়ী হলে সমিতি ও আইনজীবীদের কল্যাণে আপনার বিশেষ কোন পরিকল্পনা আছে কি?
সুভাষ চন্দ্র দাস : মহান স্রষ্টার আশীর্বাদে এবং বিজ্ঞ আইনজীবীদের মূল্যবান ভোটে নির্বাচিত হলে যে মহৎ উদ্দেশ্যে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি সে সুযোগ পাবো। নির্বাচিত হলে তথাকথিত ক্ষমতা নয় বরং দায়িত্ববোধ ও দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সমিতির একজন কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে সাধ্য ও সামর্থের সবটুকু উজাড় করে দিয়ে বিজ্ঞ আইনজীবীদের বিপদে-আপদে পাশে থাকবো।
ল’ইয়ার্স ক্লাব : পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনজীবীরা মাঝেমধ্যেই নানাবিধ হুমকিসহ শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠনের নেতৃত্ব পেলে আইনজীবী সুরক্ষা আইন প্রণয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন কিনা?
সুভাষ চন্দ্র দাস : দেখুন, বাস্তবতা হচ্ছে আইন প্রণয়নের সম্পূর্ণ এখতিয়ার মহান জাতীয় সংসদের। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কাজ নয় এটি। তবে হ্যাঁ, আপনি উদ্যোগ গ্রহণের কথা বলেছেন, এই পেশার একজন হিসেবে আইনজীবী সুরক্ষা আইন থাকবে এ চাওয়া আমারও। নির্বাচিত হলে নিশ্চয়ই সমিতির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মহলে এ আইন প্রণয়নের দাবি উত্থাপন করব।
ল’ইয়ার্স ক্লাব : সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে আইনজীবীদের ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?
সুভাষ চন্দ্র দাস : আইনজীবীদের বলা হয় ‘সমাজ প্রকৌশলী’। আবার আইনজীবীরা সহজাত নেতাও বটে। ফলে সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে আইনজীবীদের ব্যাপক ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। বিশেষত আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও আইনের সুফলতা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আইনজীবীরা সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমি মনে করি। আইনানুগ ন্যায়বিচার নিশ্চিত হলে সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে, ফলে দেশের সকল নাগরিকের মানবিক মর্যাদাও নিশ্চিত হবে। আর এক্ষেত্রে একজন আইনজীবী সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারেন।