বিধি প্রণয়ন ছাড়া ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ঢাকা ওয়াসার কর্মচারীদের পারফরম্যান্স বোনাসও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত দুটি রিট নিষ্পত্তি করে আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এ রায়ের ফলে পানির দাম বিধি না করে বাড়াতে পারবে না সংস্থাটি। তবে এর আগের যে সমস্ত মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে সেগুলোতে এ রায় কোন প্রভাব ফেলবে না।
একইসঙ্গে ২০২০-২১ অর্থবছরে ঢাকা ওয়াসার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাড়ে তিনটি করে মূল বেতন ‘পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড’ হিসেবে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সামসুন নাহার লাইজু।
রায়ের পর আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, বিধি প্রণয়ন ছাড়া পানির মূল্য নির্ধারণ ১৯৯৬ সালের ওয়াসা আইনের ২১ ও ২২ ধারার পরিপন্থী। ওয়াসা সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, কোম্পানি নয়। যে কারণে ওয়াসার কর্মীরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা জাতীয় পে-স্কেল অনুসারে বেতন-ভাতাদি পেয়ে থাকেন। তাই ওয়াসার কর্মীরা কোনো “পারফরম্যান্স বোনাস” ও “পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড” (উৎসাহ বোনাস) পেতে পারেন না।
প্রসঙ্গত, ২০২০-২১ অর্থবছরে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাড়ে তিনটি করে মূল বেতন ‘পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড’ হিসেবে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেয় ঢাকা ওয়াসা। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৯ কোটি টাকা।
সরকারের ভর্তুকিতে চলা ঢাকা ওয়াসার নিয়মিত বেতন-ভাতার বাইরে এমন বোনাস ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন উঠে। পরে বিষয়টি নিয়ে আদালতে রিট দায়ের করা হয়।
ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকা ওয়াসার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাড়ে তিনটি করে মূল বেতন ‘পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড’ হিসেবে প্রণোদনা দেওয়ার ঘোষণার ওপর স্থগিতাদেশ দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি রুল জারি করেন।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আজ রুল যথাযথ ঘোষণা করে ঢাকা ওয়াসার পারফরম্যান্স বোনাস অবৈধ বলে রায় দিলেন হাইকোর্ট।