দুদিনব্যাপী সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের (২০২৩-২৪) দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণ আজ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আজও বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ২০ প্লাটুন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে অবস্থান নিয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজও নারী পুলিশ ও এপিবিএনসহ ৫ শতাধিক পুলিশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মোতায়েন থাকবে।
এদিকে আইনজীবীদের মধ্যে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সকাল ১০টা থেকে দ্বিতীয় দিনের ভোটগ্রহণের কথা রয়েছে। সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ অংশের মনোনীত উপ-কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা ভোটে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রয়েছেন। তারা নতুন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠনের দাবিতে আন্দোলন করছেন।
প্রথম দিন যা হল
এর আগে গতকাল বুধবার নির্বাচনের প্রথম দিন সকালে নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। হট্টগোলের কারণে নির্ধারিত সময় সকাল দশটায় ভোট গ্রহণ শুরু করা যায়নি।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মিলনায়তনের ভেতর থেকে পুলিশ বের করে দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠিপেটায় আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। তবে বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পর ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
আরও পড়ুন : সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে প্রথম দিনে ভোট পড়েছে ২২১৭
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এলে বেলা ১২ টার দিকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগ অংশের মনোনীত উপ কমিটির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোট শুরু হয়। এ নিয়ে দিনভর সমিতি ভবন ও প্রাঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করে।
এদিকে বিকেল তিনটার দিকে প্রেস ব্রিফিং করেন বিএনপি সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী। এরপর সাড়ে তিনটার দিকে তারা মিছিল নিয়ে সমিতি প্রাঙ্গনে থাকা ভোটের প্যান্ডেলের দিকে আসে। এরপর এক পর্যায়ে প্যান্ডেল ভাঙচুর, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর পর পরই আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা শ্লোগানসহ পাল্টা মিছিল করে।
অন্যদিকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা সমিতি ভনের মিলনায়তনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ সময় সমিতি ভবন ও প্রাঙ্গনে পুলিশের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সমিতির দুদিন ব্যাপী ভোট গ্রহণের প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপ–কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান মনির বলেন, প্রার্থীসহ বিএনপিপন্থীদের আপত্তির কারণে ভোট গ্রহণ শুরু করতে দুই ঘণ্টা দেরি হয়। সমিতি প্রাঙ্গনে বিএনপিপন্থীরাই ভোটের প্যান্ডেল ভেঙেছে।
আরও পড়ুন : ব্যালট পেপার চুরি ও ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগে বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের নামে মামলা
পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর ১২ টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে। এবারের নির্বাচনে ৮৬০২ জন ভোটারের মধ্যে প্রথম দিন ২২১৭ ভোট পড়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান মনির।